ঘটনার সময় তাৎক্ষনিকভাবে পুলিশের গাড়ি উপস্থিত হওয়ায় সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। ফ্ল্যাট দেওয়ার অঙ্গীকার করে গত ২০১২ সালের মার্চ থেকে বিভিন্ন কিস্তিতে মোটা অঙ্কের টাকা নেওয়া হয় গ্রাহকদের কাছ থেকে। ১২ লাখ টাকা থেকে ৮০ লাখ টাকা পর্যন্ত নেওয়া হয়েছে। এভাবে অর্থের বিনিময়ে ফ্লাট দেওয়ার চুক্তি করে সাড়ে ৫৭ কোটি টাকা আত্মসাত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
জানা গেছে, এ ঘটনার সূত্রে প্রতারণাসহ বিভিন্ন মামলায় এমএ খালেক ও তার ছেলে হোসাইন মো. রাসেলের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছে।
ক্যান্টনমেন্ট থেকে আসা ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহক আবুল হোসেন জানান, খিলগাঁওয়ের ২০ নম্বর রোডের বাসিন্দা এম এ খালেক ভূঁইয়া ল’ এ্যাট ভিশন ও ল’ এ্যাট প্রপার্টিজ নামে প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলে নিজে এম এ খালেক ভূঁইয়া চেয়ারম্যান ও ছেলে হোসাইন মো. রাসেলকে ম্যানেজিং ডিরেক্টর পরিচয় দিয়ে তারা প্রতারণা করছেন। তারা প্রায় সাতশতাধিক মানুষকে ফ্ল্যাট দেওয়ার জন্য ১২ থেকে ৮০ লাখ টাকা পর্যন্ত প্রত্যেকের কাছ থেকে গ্রহণ করেন। কিন্তু অনেকের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হওয়ার পরও নির্ধারিত সময়ের মধ্যে টাকা বা ফ্ল্যাট না দিয়ে নানারকম ভাওতাবাজি করে আসছেন। এক পর্যায়ে এম এ খালেকের ‘প্রতারণার’ বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে ওঠে। তারপর গ্রাহকরা ঐক্যবদ্ধ হয়েছেন। আবুল হোসেন নিজেও ৩১ লাখ টাকা দিয়েছেন ফ্ল্যাটের আশায়।
তিনি জানান, আমাদের ফ্লাটও তিনি দিচ্ছেন না, উপরন্তু পাওনা টাকা বা ফ্লাট চাইলে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের বিভিন্ন সময় লেলিয়ে দেওয়া হয়েছে আমাদের ওপর। প্রতিরক্ষা বিভাগে চাকরি করতেন আবুল হোসেন শিকদার। কর্মজীবনের সঞ্চিত অর্থের বিনিময়ে একটি ফ্ল্যাটের স্বপ্ন দেখেছিলেন। ১২ লাখ টাকা দিয়েছেন বিভিন্ন সময়। আত্মীয় স্বজনের কাছে থেকে বাকি টাকা এনে দেবেন। টাকা দিয়ে এখন অসহায় অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন অবসরপ্রাপ্ত সার্জেন্ট আবুল হোসেন। ভুক্তভোগী মিসেস মনোয়ারা বেগম জানান, যারা ফ্ল্যাট পাওয়ার জন্য টাকা দিয়েছেন তাদের প্রত্যেকের কাছে ডকুমেন্ট রয়েছে। ফ্ল্যাট চাইতে এলেই অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের আমাদের ওপর লেলিয়ে দেওয়া হয়। সন্ত্রাসীদের হামলার শিকার হন ক্ষতিগ্রস্তরা। এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের হস্তক্ষেপে কামনা করে মিসেস মনোয়ারা বলেন, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির পরও অতীতে পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। আরেক গ্রাহক নুরুল আফসার জানান, এমএ খালেকের অপর ছেলে ফয়সালের নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা দেশি-বিদেশি অস্ত্র নিয়ে আমাদের ওপর শুক্রবার হামলা ও লুটপাট চালায়।
জানতে চাইলে বাড়ির মালিক এমএখালেক ভূঁইয়ার স্ত্রী রোকেয়া বেগম ইন্টারকমের মাধ্যমে জানান, খালেক সাহেব বাড়িতে নেই। এ ব্যাপারে তার কিছু বলার নেই। গ্রাহকদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা নিয়েও ফ্লাট দেওয়া হচ্ছে না কেনÑ জানতে চাইলে রোকেয়া বেগম বলেন, এ ব্যাপারে আমার পক্ষে উত্তর দেওয়া সম্ভব নয়।
খিলগাঁও থাসার ওসি মইনুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা জানিয়ে বলেন, এ ঘটনায় দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।
