নিজস্ব প্রতিবেদক ঃ বহুল আলোচিত বনানীর রেইন ট্রি হোটেলে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্রী ধর্ষণের ঘটনায় মামলা নিতে গড়িমসি, অভিযোগকারীদের হয়রানি ও দায়িত্বে অবহেলায় ফেঁসে যাচ্ছেন বনানী থানার ওসি ফরমান আলী।
তদন্ত কমিটির জেরার মুখে বনানী থানার ওসি ফরমান আলী কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। দুই অভিযোগকারীর মামলা গ্রহণে কেন বিলম্ব করা হয়েছে, মামলার আসামিদের সঙ্গে কী কারণে ওসি যোগাযোগ করেছেন-এমন সব প্রশ্নের কোনো উত্তর দেননি ওসি ফরমান আলী।
বনানী থানার ওসির কাজে অবহেলার ঘটনা তদন্তে গঠিত তদন্ত কমিটির মুখোমুখি হন ফরমান আলী। এর আগে তিনি ৫ দিনের ছুটি শেষ করে রবিবার থানায় যোগদান করেন।
দুপুরে তদন্ত কমিটির প্রধান ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার মিজানুর রহমান তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। এসময় তার কথাবার্তায় অসংলগ্নতা এবং তাকে বেশ নার্ভাস লক্ষ্য করা গেছে বলে জানিয়েছেন নাম প্রকাশে এক কর্মকর্তা। এই কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার (ডিবি) আব্দুল বাতেন ও যুগ্ম কমিশনার (অপরাধ) কৃষ্ণপদ রায়।
এ ব্যাপারে তদন্ত কমিটির প্রধান মিজানুর রহমান বলেন, আইন অনুযায়ী ঐ পুলিশ কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এর আগে এ ঘটনায় দুই ভিকটিমকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তদন্তে কারো কোনো গাফিলতির প্রমাণ মিললে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, গত ২৮ মার্চ বনানীর দ্য রেইন ট্রি হোটেলে জন্মদিনের অনুষ্ঠানের কথা বলে দুই ছাত্রীকে ডেকে ধর্ষণ করা হয়। ৪ মে দুই অভিযোগকারী বনানী থানায় মামলা করতে যান। এসময় থানার ওসি তাদের চরিত্র হননের চেষ্টা করেন। থানা থেকে তাদের বের করে দেন।
পরে ৬ মে দুই অভিযোগকারী থানায় গিয়ে মামলা দায়ের করেন। অভিযোগ রয়েছে, থানার ওসি মামলার আসামিদের কাছ থেকে ২৫ লাখ টাকা গ্রহণ করেছেন। এ কারণে তিনি এই মামলার আসামিদের গ্রেপ্তার না করে উল্টো বাদীর চরিত্র হননের চেষ্টা করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এতে ওই ধর্ষিতা দুই ছাত্রী সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘বলতে পারেন আমরা থানায় অভিযোগ দিতে গিয়ে দ্বিতীয়বার পুলিশের কাছে ধর্ষণের শিকার হয়েছি।’ এরপরই নড়েচড়ে উঠে পুলিশ প্রশাসন। গঠন করে তদন্ত কমিটি। তদন্তে গাফিলতির প্রমাণ মিললে ওই পুলিশ কর্মকর্তা সাময়িকভাবে চাকরিচ্যুত হতে পারেন।