আমরা সময়ের কথা সময়ে বলি।

Advertisement

ফলোআপ নাসিরনগর ডাকাতের অভয়াশ্রম কালিউতা ডাকাতিয়াকান্দি

ব্রাহ্মণবাড়িয়া 3 June 2017 ১৪


গ্রামের অন্তরালে গডফাদার শফিক মেম্বার
নাসিরনগর প্রতিনিধি ঃ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলার চাপরতলা ইউনিয়নের ডাকাতিয়াকান্দি গ্রাম চোর, ডাকাত, মাদক ব্যবসা ও ছিনতাইয়ের অভয়াশ্রমে পরিণত হয়েছে। এলাকাবাসির অভিযোগের প্রেক্ষিতে ও থানার মামলা সুত্রে জানা গেছে চাপরতলা ইউনিয়নের ডাকাতিয়াকান্দি গ্রামের মৃত দুধ মিয়ার ছেলে সফিক মেম্বার (৪২) তার ভাই বাবুল মিয়া (৩৮) ছোয়াব মিয়া (২৮) মিলে গরু চুরি, মাদক ব্যবসা ও দেহ ব্যবসার গডফাদার হিসাবে দীর্ঘদিন যাবৎ কাজ করছে। তাছাড়াও তার নেত্রিত্বে আরো বেশ কয়েকজন মিলে সমস্ত অপকর্মের মদদ দিচ্ছে। তাদের নেত্রিত্বে এখানে পুরোদমে চলে চুরি, ডাকাতি, জোয়া, মাদক ব্যবসা।

গত ২রা মার্চ ২০১৭” ডাকাতির প্রস্তুতিকালে ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ সামসু মিয়া (৪০) ও কাউছার মিয়া (৪১) নামে কুখ্যাত দুই ডাকাতকে জনতার সহযোগিতায় আটক করে। ওই সময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে কালিউতা গ্রামের কুখ্যাত ডাকাত মাসুম মিয়া, ছোয়াব মিয়া, বেঙ্গাউতা গ্রামের মিজান মিয়া, কানু মিয়া, সরুউল্লা­সহ অজ্ঞাতনামা আরো অনেকেই দৌঁড়ে পালিয়ে যায়। জানা গেছে সামসু মিয়ার বাড়ি হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর উপজেলার খাউড়া গ্রামে। সামসু মিয়ার নামে মাধবপুর হবিগঞ্জ, লাখাই ও নাসিরনগরসহ বিভিন্ন থানায় একাধিক চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই ও ধর্ষণের মামলা রয়েছে। এলাকাবাসী জানায় ডাকাতিয়াকান্দিতে শফিক মেম্বার ও তার ভাইদের সহযোগিতায় গড়ে উঠেছে ডাকাতদের অভয়াশ্রম। এখানে তারাউল্লাহ, বানেশ্বর, রামপুর, বেঙ্গাউতা, হবিগঞ্জ, মাধবপুর থেকে ডাকাতরা এসে সঙ্গবদ্ধ হয়ে বিভিন্ন জায়গায় ডাকাতি করে।

ওই সময়ে আউয়াল মিয়ার ঘর থেকে একটি, আব্দুল কুদ্দুছের ঘর থেকে একটি ও বাবুল মিয়ার ঘর থেকে একটি মোট ৩টি চোরাই গরু উদ্ধার করা হয়েছে। এলাকার নুর ধন মিয়া, আজদু মিয়া, এমদাদুল্লা, সামছু উদ্দিন চৌধুরী, হোসাইন মিয়া, দুলাল মিয়া, তাহের মিয়া, শরিফ উদ্দিনসহ আরো বেশ কয়েক জন এ প্রতিনিধিকে জানায় চুরি, ডাকাতি, জোয়া, বহিরাগত  বিভিন্ন রাস্তা থেকে তাদের লোকজনের মাধ্যমে গাড়ি থামিয়ে যাত্রিদের জিম্মী করে মুক্তিপণ দাবী করে বিকাশের মাধ্যমে অভিভাবকদের নিকট থেকে টাকা এনে ছেড়ে দেওয়া হয়।

টাকার বিনিময়ে অপ্রাপ্ত বয়স্কদের বয়স বাড়িয়ে জন্ম নিবন্ধন, জীবিত স্বামীকে মৃত দেখিয়ে বিধবা ভাতা প্রদান, ড্রেজারের মাধ্যমে সরকারি খাস জায়গা থেকে মাটি তুলে বিক্রি করে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়াসহ সমস্ত অপকর্মের গডফাদার সফিক মেম্বার। তার ভাই বাবুল মিয়া একজন কসাই। সে চোরাই গরু জবাই করে মাংস বিক্রি করে থাকে। আর এক ভাই ছোয়াব মিয়া একজন ফেনসিডিল ব্যবসায়ী। ছোয়াব মিয়ার নামে ঢাকার বিমানবন্দর থানায় ফেনসিডিলের মামলা চলমান রয়েছে। তাদের ভয়ে এলাকার লোকজন আতঙ্কে বসবাস করছে। থানা পুলিশ তাদের গ্রেফতার করতে গেলে টের পেয়ে তারা পালিয়ে যায়। পুলিশ চলে এলে দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে এলাকাবাসীর ওপর অাক্রমল চালায়।

এ বিষয়ে থানায় একটি ডাকাতি প্রস্তুতির মামলা রজু করা হয়েছে। যাহার নং-০২ তারিখ-০৩/০৩/২০১৭। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পুলিশ পরিদর্শক মো. কাউছার হোসাইন জানান শফিক ও কাউছারকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। পরবর্তীতে আরো ৩ জনসহ মোট ৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। শফিকুল ইসলাম মেম্বার জীবীত স্বামীকে মৃত দেখিয়ে বিধবা ভাতা উত্তোলনের বিষয়ে নাসিরনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. লিয়াকত আলী ভারপ্রাপ্ত সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. মনির হোসেনকে কারণ দর্শাণোর নোটিশ প্রেরণের নির্দেশ দিয়েছেন।

চাপরতলা ইউপি চেয়ারম্যন মো. ফয়েজ উদ্দিন ভুইয়া (পারভেজ মাস্টার) সহ অনেকেই এ প্রতিনিধিকে জানান সমস্ত চোরাই গরুর রশিদ শফিক মেম্বারের মাধ্যমে কালা মিয়ার ছেলে আনফর আলী টাকার বিনিময়ে দিয়ে থাকে। তারা জানান বর্তমানে ডাকাতদের ভয়ে এলাকাবাসি আতংকে রয়েছে। এলাকাবাসি জানান ডাকাতরা প্রতিনিয়ত তাদের অনেক কেই প্রাণনাশের হুমকী দিয়ে বেড়াচ্ছে। এ বিষয়ে কালিউতা গ্রামের শামছু উদ্দিন চৌধুরী বাদী হয়ে জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে নাসিরনগর থানায় সাধারণ ডায়েরি নং- ৫২১ তারিখঃ ১৩/০৩/২০১৭ইং রজু করে। এ বিষয়ে জানতে চেয়ে শফিকুল ইসলাম মেম্বারের ব্যবহৃত মোবাইল নাম্বারে একাধিকবার যোগাযোগ করেও তার কোন সাথে কোন যোগাযোগ করা যায়নি।