
গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী গ্রাম ভেরামতলী। ভেরামতলী গ্রামের পূর্ব দিকে গাজীপুর সদর উপজেলার পিরুজালী, পশ্চিম-দক্ষিণে কালিয়াকৈর উপজেলার সিরাজপুর ও রামচন্দ্রপুর গ্রাম। এই তিনটি উপজেলার সীমানা ঘেঁষে বয়ে গেছে সালদহ নদী ও একটি খাল। প্রতিদিন ওই তিন গ্রামের বাসিন্দাদের দৈনন্দিন কাজে নদী পার হতে হয়। ভরা বর্ষায় নদী পারাপারে একমাত্র ভরসা নৌকা থাকলেও তা পরিচালনা করার জন্য সবসময় লোক পাওয়া যায় না। নদীর দু’পাশের সংযোগ সড়ক থাকার পরও নদীতে কোনো সেতু না থাকায় শুকনো মৌসুমে নদী পারাপারের একমাত্র ভরসা বাঁশের সাঁকো।
স্থানীয়রা জানান, এক সময়ের প্রবাহমান সালদহ নদী দূষণ-দখলে এখন অনেকটা খালে পরিণত হয়েছে। নদীটির তিনদিকে তিন উপজেলার তিনটি গ্রাম থাকলেও সরাসরি বিচ্ছিন্ন করে রেখেছে পিরুজালী ও রামচন্দ্রপুর গ্রামকে। নদীটির দু’দিকে সংযোগ সড়ক থাকলেও দীর্ঘদিনেও এখানে কোনো সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়নি। বর্ষায় নিজেদের প্রয়োজনীয়তার কথা ভেবে স্থানীয়রা নৌকার ব্যবস্থা করলেও সারাবছর তা থাকে না। বাকি সময় চলাচলের জন্য নিজেরাই সাঁকো তৈরি করে পারাপার হন।
পিরুজালী গ্রামের আব্দুল মান্নান জানান, সীমান্তবর্তী তিন উপজেলার তিন গ্রামের শিক্ষার্থীরা নদী পার হয়ে বিদ্যালয়ে যাওয়া আসা করে। এছাড়া নদীর ওপারের অধিকাংশ জমিই এপারের লোকজনের। তাই কৃষিকাজ করে কৃষি পণ্য আনা নেয়ায় চরম অসুবিধায় ভুগতে হচ্ছে আমাদের। এখানে একটি সেতু হলে স্থানীয় ছাত্র-ছাত্রী ও কৃষকের অনেক সুবিধা হবে।
রামচন্দ্রপুর গ্রামের আমিনুল ইসলাম জানান, আমাদের গ্রামটি উপজেলার এক প্রান্তে। তাই এই গ্রামের অধিকাংশ লোকের পাশের সদর উপজেলার পিরুজালীর সঙ্গে যোগাযোগ বেশি। সেতুটি হলে জেলা সদরের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ সহজ হবে।
সিরাজপুর গ্রামের সোহেল রানা জানান, গ্রামটি কালিয়াকৈর উপজেলার হলেও দূরত্ব বিবেচনায় গ্রামের বাসিন্দারা কালিয়াকৈর যাওয়ার থেকে সদর উপজেলায় যাওয়া আসা করতে সাচ্ছন্দ বোধ করে। কিন্তু বাঁধ সাধে এই নদী। বর্ষায় নৌকা না থাকা আর শুকনো মৌসুমের নিজ উদ্যোগে সাঁকো নির্মাণ না করলে যাতায়াত বন্ধ থাকে। তাই শালদহ নদীর এ অংশে একটি সেতু নির্মাণের দাবি জানান তিনি।
কালিয়াকৈর উপজেলার ফুলবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল হাকিম জানান, প্রতিদিন দুই গ্রামের অসংখ্য মানুষ সাঁকো পার হয়ে নিত্যদিনের কাজ করে থাকেন। এখানে একটি সেতু নির্মাণ হলে হাজারও মানুষ উপকৃত হবে।
এ বিষয়ে গাজীপুর জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মাহাবুবুর রহমান জানান, সরেজমিন দেখে স্থানটি জনগুরুত্বপূর্ণ বিবেচনা হলে স্থানীয়দের দুর্ভোগ লাগবে সেতু নির্মাণ করা হবে।
সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আমিরুল ইসলাম জানান, বর্তমানে ৭/৮টি সেতুর কাজ চলমান রয়েছে। পরবর্তীতে ওই শালদহ নদীর উপর সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা আছে।