লন্ডনে তারেক রহমান পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই এবং দেশে মির্জা ফখরুল পাকিস্তানি দূতাবাসে গিয়ে গোপন বৈঠক করে নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র করছেন বলে অভিযোগ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের।
তিনি বলেছেন, বিএনপি না এলে নির্বাচনের ট্রেন থেমে থাকবে না। সাজাপ্রাপ্ত একজন আসামির নেতৃত্বে যে দল ও জোট চলছে, তাদের সঙ্গে জনগণ নেই। যতই ষড়যন্ত্র হোক জনগণ তা রুখে দেবে। সোমবার দুপুরে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছ থেকে প্রতীক বরাদ্দ নেয়ার পর নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি বিদেশিদের কাছে শুধু নালিশ দিচ্ছে না, সর্বশেষ খবর হল- লন্ডনে বসে তারেক রহমান পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইয়ের সঙ্গে বৈঠক করছেন। এই বৈঠকগুলো কেন? ঢাকায় মির্জা ফখরুল পাকিস্তানি দূতাবাসে গিয়ে গোপন বৈঠক করছেন। এই বৈঠকের অর্থ কী? এই বৈঠকের অর্থ হচ্ছে নির্বাচন বানচাল করা।
নির্বাচন আদৌ হবে কিনা চায়ের দোকানের আড্ডায় ভোটারদের এমন শঙ্কার বিষয়ে একজন সাংবাদিক জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমি শতভাগ আশাবাদী। এবার বাংলাদেশের জনগণ কোনো ষড়যন্ত্রের কাছে নতি স্বীকার করবে না। বাংলাদেশের জনগণ যে কোনো পরিস্থিতিতে ভোট দিতে প্রস্তুত।’
আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীর বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগে বিদ্রোহী মাত্র সাতজন। এটা ইতিহাসে বিরল। যারা বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন, তারাও প্রত্যাহার করে নেবেন। ৩০ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগ বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়ে আবারও সরকার গঠন করবে।
মন্ত্রী বলেন, ‘বিদ্রোহী নিয়ে দুর্ভাবনায় আছে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ঐক্যফ্রন্ট। তাদের জিজ্ঞেস করুন। তাদের মনোনয়নপত্র টিকেছে ৫৫৫ জনের। এর মধ্যে কয়জন বসেছে। আমার মনে হয় খুব কমই আছে, যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতার বাইরে আছে।’ কাদের বলেন, তাদের ঘরের বিবাদ বাইরে ছড়িয়ে পড়েছে। মির্জা ফখরুল নিজেই দলের কর্মীদের বিক্ষোভের মুখে পড়েছেন। কারণ তারা মনোনয়ন বাণিজ্য করেছেন। এটা এখন প্রমাণিত। তাদের মনোনয়নবঞ্চিতরা ভাংচুর করছে, হামলা করছে। ফখরুল ইসলাম আলমগীরের রুমে লাথি মারছে, হামলা করছে। বলছে, হয় মনোনয়ন দাও, নয় টাকা ফেরত দাও।’
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও নোয়াখালী-৪ (সদর ও সুবর্ণচর) আসনের এমপি একরামুল করিম চৌধুরীর সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি খায়রুল আনম সেলিম, যুগ্ম সম্পাদক আবদুল মমিন বিএসসি, সাংগঠনিক সম্পাদক সামসুদ্দিন সেলিম, মাইজদী শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল ওয়াদুদ পিন্টু, সাধারণ সম্পাদক ও নোয়াখালী পৌরসভা মেয়র শহিদ উল্লাহ খান সোহেল, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শিহাব উদ্দিন শাহিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। মতবিনিময় সভা শেষে মন্ত্রী নোয়াখালী-৫ (কোম্পানীগঞ্জ ও কবিরহাট) নিজ আসনে গণসংযোগ করতে যান।
ধানের শীষ জনগণের পেটের বিষ : ওবায়দুল কাদের বিকালে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের সরকারি মুজিব কলেজ গেটে পথসভায় বক্তব্য দেন। এ সময় তিনি বলেন, মওদুদ আহমদ মিথ্যাচার করছে, নিজেদের লোকদের দিয়ে বোমা মেরে আওয়ামী লীগের ওপর দোষ চাপাচ্ছে। আসলে ধানের শীষ এখন জনগণের পেটের বিষে পরিণত হয়েছে। তিনি আরও বলেন, কোম্পানীগঞ্জ ও কবিরহাট আমার দুই ভাই। দুই উপজেলায় আমি সমানভাবে উন্নয়ন করেছি। এছাড়া আমি সারা দেশে ব্যাপক উন্নয়ন করেছি। প্রধানমন্ত্রী আমাকে দায়িত্ব দেয়ার পর আমি প্রাণপণ চেষ্টা করেছি।
তিনি বলেন, মওদুদ আহমদ ক্ষমতায় থাকাকালে এলাকায় তেমন উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন করেননি। এলাকাকে অন্ধকারে রেখেছিলেন। এই এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন কাজ চলছে। এসব কাজ সমাপ্ত করতে শেখ হাসিনাকে দরকার।
পথসভায় নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাহাব উদ্দিন, বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা,
জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদল, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা খিজির হায়াত খান, সাধারণ সম্পাদক
নুর নবী চৌধুরী, বসুরহাট পৌরসভা আওয়ামী লীগের সভাপতি রেয়াজুল হক লিটন, সাধারণ সম্পাদক আবুল খায়ের, যুবলীগের সভাপতি ভাইস চেয়ারম্যান আজম পাশা চৌধুরী রুমেল, সাধারণ সম্পাদক প্রভাষক গোলাম ছারওয়ার, স্বাধীনতা ব্যাংকার্স পরিষদের সদস্য ফখরুল ইসলাম রাহাত, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নিজাম উদ্দিন মুন্না, সরকারি মুজিব কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি নুর এ মাওলা রাজু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
[gs-fb-comments]Copyright © 2023 Amaderkatha | Design & Developed By: Design Ghor