
ঢাকা।।
সুপ্রাচীন কাল থেকেই বাংলাদেশের ঢাকা তার মসলিন এবং অন্যান্য মিহিবস্ত্রের কারনে বিশ্বের অন্যতম টেক্সটাইল নগরী ছিল। তখন কাপড়ের রঙ দেয়া হতো প্রাকৃতিক রঙ থেকে যা দূষণ করতো না। এর বহুকাল পরে এসে রেডিমেড গার্মেন্টস এর কারনে আবারও ঢাকা হয়েছে বিশ্বের টেক্সটাইল ক্যাপিটাল। কিন্তু মাঝে প্রাকৃতিক রঙ এর জায়গায় এসেছে বিষাক্ত রাসায়নিক রঙ আর অন্যান্য রাসায়নিক। দেশের জনসংখ্যা বেড়েছে হুহু করে আবার মৃত্যুহার কমেছে। তাই আগের বস্ত্রশিল্পের নিষ্পাপ গৌরবের বদলে এখন এসেছে বস্ত্রশিল্পের কলংকিত গৌরব। বাংলাদেশের গার্মেন্টস মালিকদের গুটি কয়েক ছাড়া বেশীরভাগই সীমাহীন লোভী এবং অ-দেশপ্রেমিক। তাঁদের প্রত্যেকের বিদেশে বাসাবাড়ি আছে, তাঁদের ছেলেমেয়েরা বিদেশে পড়ে। একদিন তারাও সেখানে চলে যাবেন। রেখে যাবেন বাংলাদেশের দূষিত নদী, বিষাক্ত পানি, কৃষি, মাছ সবজি। উনাদের প্রত্যেকের ফ্যাক্টরিতেই ইটিপি আছে। কিন্তু খরচ বাঁচাতে তারা সেটা চালান না। পরিবেশ অধিদপ্তরের ম্যাজিস্ট্রেট গেলে তাকে ফ্যাক্টরির গেট এ দাঁড় করিয়ে এর পরে ইটিপি চালানো হয় এবং ম্যাজিস্ট্রেট চলে গেলে আবার তা বন্ধ করে দেয়া হয়। গার্মেন্টস শ্রমিকেরা জানে না, তারা যে বিষাক্ত রাসায়নিক ঘাটছেন রোজ এর কি প্রভাব তাঁদের দেহে পড়ছে।
এখন কথা হলো, এতো অসৎ লোকের সাথে সরকার কতো চোর পুলিশ খেলবে? আর এভাবে কতোজনের পেছনে পুলিশ লাগিয়ে রাখা যায়? দেশের মাটি পানি কৃষি রক্ষার দায় কি শুধু সরকারের একার? অথচ এমন না যে ইটিপি চালু রাখলে মালিকেরা বিশাল ক্ষতির মুখে পড়বেন। তাঁদের লাভের অংক হয়তো কমে আসবে। কিন্তু সেটা তো ক্ষতি না। আবার এই লোকগুলিই এদেশের মাছ, শাকসবজি খায়। তারা যদি কোনোদিন নিজের বাসার জন্য কেনা মাছ মাংস সবজির রাসায়নিক পরীক্ষা করে দেখত তাহলে বুঝতে পারত, তাঁদের লোভ আর পাপের ফল তাঁদের দেহেও ঢুকছে।