
ঢাকা।।
কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার অসুস্থতায় উদ্বেগ প্রকাশ করে তার সুচিকিৎসার দাবি জানিয়েছেন ১০১ জন চিকিৎসক। শুক্রবার এক বিবৃতিতে এ দাবি জানান তারা। বিবৃতিতে তারা বলেন, খালেদা জিয়া প্রায় এক বছর দেড় মাস ধরে কারাবন্দি। বয়সজনিত নানা রোগে আক্রান্ত একজন নারীর এই নির্জন মানবেতর কারাবাস স্বাস্থ্য ও স্বাভাবিক জীবনযাপনের জন্য ক্ষতিকারক। এই পিচ্ছিল স্যাঁতসেঁতে পরিবেশে পড়ে গিয়ে তার হাঁটু, ঊরুসন্ধি, হাত ও মেরুদণ্ডের হাড় ভাঙাসহ মস্তিস্ক ও স্পাইনাল কর্ডে আঘাতজনিত পক্ষাঘাতে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। নিঃসঙ্গ ও নিরাপত্তাহীন পরিবেশের কারণে নিদ্রাহীনতা, উদ্বেগ, বিষণ্ণতাসহ নানা মানসিক রোগাক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না।
চিকিৎসকরা বলেন, বিরূপ পরিবেশ ও অস্বাভাবিক মানসিক চাপের ফলে তার আকস্মিক হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও বহুগুণ বেড়েছে। পুরনো, পরিত্যক্ত দূষণযুক্ত ভবনের বিষাক্ত পরিবেশে তার গুরুতর ওষুধ-প্রতিরোধী জীবাণু দ্বারা ফুসফুসের সংক্রমণ বা নিউমোনিয়ার আশঙ্কাও প্রবল।
তারা বলেন, খালেদা জিয়া কোনো সাধারণ রোগী নন। চিকিৎসকের পরিভাষায় তিনি একজন বিশেষ পরিচর্যাসাপেক্ষ রোগী। সে হিসেবে তার একান্ত ব্যক্তিগত পরিচর্যার সব সুবিধা নিশ্চিত করা সভ্য, গণতান্ত্রিক ও মানবিকতাবোধসম্পন্ন জাতির কর্তব্য।
বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন অধ্যাপক ডা. বায়েছ ভূঁইয়া, অধ্যাপক সিরাজউদ্দিন আহমদ, অধ্যাপক আব্দুল মান্নান মিয়া, অধ্যাপক মবিন খান, অধ্যাপক মিজানুর রহমান, অধ্যাপক মতিউর রহমান মোল্লা, অধ্যাপক এ এস এম এ রায়হান, অধ্যাপক ফিরোজা বেগম, অধ্যাপক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম প্রমুখ।
উপজেলা ও ডাকসু নির্বাচনে অব্যবস্থাসহ সামগ্রিকভাবে নির্বাচন প্রক্রিয়াকে ছিনতাই করা হয়েছে
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বাতিল এবং পুননির্বাচন দাবিতে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। দাবি আদায়ে এপ্রিল মাস থেকে বিভাগীয় ও জেলাসমুহে সভা-সমাবেশ ও গণশুনানর আয়োজন করবে ঐক্যফ্রন্ট। এছাড়া গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির প্রস্তাবের প্রতিবাদসহ ৫ দফা দাবিতে রাজধানীতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করবে এই জোট।
শুক্রবার রাজধানীর পল্টনে জামান টাওয়ারে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অস্থায়ী কার্যালয়ে স্টিয়ারিং কমিটির বৈঠক শেষে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ও নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না। তিনি বলেন, গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি, নিরাপদ সড়ক, উপজেলা ও ডাকসু নির্বাচনে অব্যবস্থাসহ সামগ্রিকভাবে নির্বাচন প্রক্রিয়াকে ছিনতাই করা হয়েছে। সীমাহীন অর্থনৈতিক বৈষম্য সৃষ্টি করে সরকার লুটপাটের ব্যবস্থা কায়েম করেছে। এসবের প্রতিবাদ ৩০ ডিসেম্বর সকাল ১১টায় রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন করবেন তারা। সারাদেশে এই আন্দোলন ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য এপ্রিল মাসে বিভাগীয় শহরগুলোতে কর্মীসমাবেশ, সমাবেশ অথবা গণশুনানীর আয়োজন করা হবে। এরপর তারা জেলায় জেলায় যাবেন।
মান্না বলেন, ৩০ ডিসেম্বরের ভোট ২৯ তারিখ রাতে ডাকাতি করে নিয়ে যাওয়ার পরে মানুষ ভোটের প্রতি শ্রদ্ধা হারিয়ে ফেলেছে। সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মানুষ ভোট দিতে যায়নি, উপজেলা নির্বাচনে ভোট দিতে যায়নি। নির্বাচন কমিশনই একথা স্বীকার করছে। বর্তমান সরকারের শরিক একজন সাবেক রাষ্ট্রপতিও বলেছেন, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়ছে, দেশের অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে।
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি সভাপতি আ স ম আব্দুর রব বলেন, ২৯ ডিসেম্বর রাতে ভোট ছিনতাই ও ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে ভোট ডাকাতি হয়েছে, বিনা নির্বাচনে অনেকে নির্বাচিত হয়েছে। ঋণ খেলাপীরা জনগনের আমানতের কোটি কোটি টাকা লুট করেছে। বছরের পর বছর নাগরিকরা অপহৃত হচ্ছে। এর বিরুদ্ধে জাতি আজ ঐক্যবদ্ধ হচ্ছে। আর এই ঐক্যকে আরো সুদৃঢ় করার জন্য এপ্রিল মাস থেকে ধারাবাহিক কর্মসূচি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ঐক্যফ্রন্ট।
এছাড়া মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে দুইদিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। আগামী ২৬ মার্চ সকালে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে বীর শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন এবং ৩১ মার্চ বিকালে রমনা ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে আলোচনা সভার আয়োজন এই জোট।
বৈঠকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান, গণফোরামের সির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মোহসীন মন্টু, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাষ্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, জেএসডির সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক রতন, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান তালুকদার বীর প্রতীক, গণফোরামের জগলুল হায়দার আফ্রিক, মোশতাক আহমেদ, রফিকুল ইসলাম পথিক, বিকল্পধারা (একাংশ) মহাসচিব শাহ আহমেদ বাদল, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের ইকবাল সিদ্দিকী, নাগরিক ঐক্যের শহিদুল্লাহ কায়সার, ডা. জাহেদ-উর রহমান উপস্থিত ছিলেন।