আমরা সময়ের কথা সময়ে বলি।

Advertisement

নবীনগরে আলোচনায় এমপি বুলবুল

বিশেষ প্রতিবেদন 26 March 2019 ৪৯১

নবীনগর।।

নৌকা প্রতীক নিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫ (নবীনগর) আসন থেকে এমপি নির্বাচিত হয়েছেন কেন্দ্রীয় কৃষকলীগের উপদেষ্টা এবাদুল করিম বুলবুল। এবার তার বিরুদ্ধেই নবীনগর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী কাজী জহির সিদ্দিক টিটুর বিপক্ষে অবস্থান নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। দলের বিদ্রোহী প্রার্থী মো. মনিরুজ্জামান মনিরকে সমর্থন জানিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েছেন এই এমপি।

নিজের পছন্দের প্রার্থীকে দলের মনোনয়ন না দেয়ার কারণেই বুলবুল নৌকার প্রার্থীর বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। যদিও এমপি হওয়ায় প্রার্থীর পক্ষে-বিপক্ষে অবস্থান নেয়ার কোনো সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন বুলবুল।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নবীনগর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে দলীয় মনোনয়নের জন্য ‘একক প্রার্থী’ হিসেবে উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি হাবিবুর রহমান স্টিফেনের নাম কেন্দ্রে পাঠাতে বলেন এমপি বুলবুল। তবে স্টিফেনকে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা ও শীর্ষ যুদ্ধাপরাধী গোলাম আযমের আত্মীয় দাবি করে তার বিরোধীতা করতে থাকেন মনোনয়ন প্রত্যাশী তিন প্রার্থী কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের উপ-কমিটির সহসম্পাদক কাজী জহির সিদ্দিক টিটু, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এইচ.এম আল-আমিন আহমেদ ও জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম ফেরদৌস।

ওই তিন প্রার্থীর সঙ্গে দলের তৃণমূলের নেতা-কর্মীরাও স্টিফেনকে ‘বিতর্কিত’ উল্লেখ করে তাকে দলের মনোনয়ন না দেয়ার দাবি জানান। এসব নিয়ে একাধিক গণমাধ্যমে সংবাদও প্রকাশিত হয়। পরবর্তীতে স্টিফেনকে বাদ দিয়ে দলের মনোনয়ন দেয়া হয় কাজী জহির সিদ্দিক টিটুকে। কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত মেনে নিয়ে মনোনয়ন বঞ্চিত আল-আমিন আহমেদ ও সিরাজুল ইসলাম ফেরদৌস নৌকার প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণায় অংশ নেন।

তবে দলের প্রার্থীকে সমর্থন জানানোর পরিবর্তে বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষে অবস্থান নেয়ার অভিযোগ উঠেছে এমপি বুলবুলের বিরুদ্ধে। সাবেক এমপি ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফয়জুর রহমান বাদল দলীয় প্রার্থীকে সমর্থন জানিয়ে প্রচারণায় অংশ নিলেও গত রোববার ঢাকার একটি হোটেলে নবীনগর উপজেলার বেশ কয়েটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদককে নিয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী মনিরুজ্জামানকে সমর্থন জানান এমপি বুলবুল। ওই বৈঠকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম.এ হালিমও উপস্থিত ছিলেন। এতে বিদ্রোহী প্রার্থী মনিরুজ্জামান মনিরকে সমর্থন জানিয়ে আরেক বিদ্রোহী প্রার্থী নাছির উদ্দিন নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন।

এমপি বুলবুলের ওই বৈঠকের পরদিন সোমবার নবীনগর উপজেলা বাসস্ট্যান্ডে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী কাজী জহির সিদ্দিক টিটুর সমর্থনে নির্বাচনী সভা করে উপজেলা আওয়ামী লীগ। এতে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন সরকার, নবীনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফয়জুর রহমান বাদল, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৯নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর এ.কে.এম মমিনুল হক সাঈদ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী মোর্শেদ হোসেন কামালসহ দলীয় নেতৃবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন। তবে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম.ল হালিম সভায় অনুপস্থিত ছিলেন।

এমপি বুলবুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী কাজী জহির সিদ্দিক টিটু বলেন, ঢাকায় বৈঠক করে এমপি মহোদয় দুইজন বিদ্রোহী প্রার্থীর মধ্যে একজনকে বসিয়ে দিয়ে আরেকজনকে সমর্থন দিয়েছেন। গতকাল নবীনগরে গ্রামের বাড়িতে এসে সবাইকে ডেকে ওনি বলেছেন মনিরুজ্জামানকে ভোট দেয়ার জন্য।

দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়ার ব্যাপারে জানতে চাইলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫ (নবীনগর) আসনের এমপি এবাদুল করিম বুলবুল বলেন, বিরুদ্ধে নেয়ারও সুযোগ নেই পক্ষে নেয়ারও সুযোগ নেই। আমিতো নিষ্ক্রিয়, এমপিরা কোনো নির্বাচনে সরাসরি ভূমিকা রাখতে পারে না। আমি নেত্রীকে (শেখ হাসিনা) জানিয়েছি একজনকে নমিনেশন দিয়েছেন কিন্তু আমাদের আরও দুইজন স্বতন্ত্র প্রার্থী আছেন। ওনি বলেছেন, তুমি চুপ থাকো, ওরা কম্পিটিশন করুক। আই ওয়ান্ট কন্টেস্টিং ইলেকশন। ঢাকায় বৈঠকের প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বুলবুল বলেন, বৈঠকটি মতবিনিময়ের জন্য ছিল। আমাকে আমন্ত্রণ জানানোয় আমি গিয়েছি।