
জেলা প্রতিনিধি।।
ফরিদপুরে প্রাণনাশের হুমকিতে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে ধর্ষণের শিকার এক স্কুলছাত্রী ও তার পরিবারের সদস্যরা। এ ঘটনায় মামলা হলেও পুলিশ আসামিদের আটক না করায় অসহায় ওই পরিবারটি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে ফরিদপুর প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন জেলার নগরকান্দা উপজেলার বাসিন্দা ধর্ষণের শিকার ওই ছাত্রীর মা। সংবাদ সম্মেলনে অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মুক্তিযোদ্ধা মো. খলিলুর রহমান ও ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ুয়া ওই ছাত্রী উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য ওই স্কুলছাত্রীর মা বলেন, গত ৪ মার্চ বিকেলে আমার মেয়ে তার নানাবাড়ি শাকপালদিয়া যাচ্ছিল। পথিমধ্যে স্থানীয় সজিব (১৮), ছরোয়ার, সাইফুল, দেলোয়ার ও রাশেদ আমার মেয়েকে জোড়পূর্বক একটি মাহেন্দ্র গাড়িতে তুলে নেয়। এরপর তার চোখ, মুখ ও হাত বেঁধে ফরিদপুর সদর উপজেলার বাখুন্ডা এলাকার একটি বাড়িতে রাখে। রাতে জোড়পূর্বক আমার মেয়েকে ধর্ষণ করে সজিব। পরদিন সকালে আমার মেয়েকে ভারতে পাচারের উদ্দেশ্যে মাইক্রোবাসযোগে বেনাপোল নিয়ে যায় সজিব ও তার সহযোগীরা। তিনি আরও বলেন, বেনাপোল সীমান্তের একটু আগে সজিব ও আমার মেয়েকে গাড়িতে রেখে অন্যরা চলে আসে। পরে সজীব আমার মেয়েকে নিয়ে বর্ডার পার হওয়ার সময় পুলিশের হাতে ধরা পড়ে। বেনাপোল থানা থেকে আটকের বিষয়টি নগরকান্দা থানায় জানালে নগরকান্দা থানা পুলিশ তাদের উদ্ধার করে নিয়ে আসে। ওই স্কুলছাত্রীর মা বলেন, এ ঘটনায় গত ৭ মার্চ আমি নিজে বাদী হয়ে সজিবসহ পাঁচজনের নামে নগরকান্দা থানায় মানবপাচার ও ধর্ষণের মামলা দায়ের করি। ওই মামলায় সজিবকে কোর্টের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করে পুলিশ। কিন্তু অন্য ৪ আসামি ছরোয়ার, সাইফুল, দেলোয়ার ও রাশেদকে আটকে পুলিশ গড়িমসি করছে। এদিকে পুলিশ আসামিদের আটক না করায় আসামি ও তাদের পরিবারের সদস্যরা আমাদের বাড়িতে এসে প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে। মামলা তুলে নিতে নানাভাবে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। ভয়ে আমরা এলাকা ছেড়ে ফরিদপুরে এসে রয়েছি। এলাকায় যেতে পারছি না। তিনি আরও বলেন, আমি একজন অসহায় দরিদ্র মানুষ। সহায় সম্বল বলতে আমার কিছু নেই। আমার স্বামী অন্যের বাড়িতে কৃষিকাজ করে যা পায় তা দিয়ে কোনো রকমে সংসার চলে। আমার মেয়ের ওপর এমন অত্যাচার করেও ওরা পার পেয়ে যাচ্ছে। ওই স্কুলছাত্রীর মা কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, সজিব ও তার সহযোগীরা দীর্ঘদিন যাবৎ মানবপাচারের সঙ্গে জড়িত। আমার মেয়েকে বর্ডার পার করতে পারলেই আর মেয়েকে পেতাম না। এর আগেও এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছে সজিব ও তার সহযোগীরা। আসামিরা স্থানীয় প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় থেকে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও তাদের আটক করছে না পুলিশ। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নগরকান্দা থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) রবিউল ইসলাম বলেন, আসামিরা এলাকায় প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে বিষয়টি সত্য নয়। এক আসামি ভারতে চলে গেছে, অন্যরাও এলাকায় নেই। আসামিদের আটকে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালানো হচ্ছে।