আমরা সময়ের কথা সময়ে বলি।

Advertisement

লন্ডন থেকে ফণি মনিটর করছেন প্রধানমন্ত্রী

সারাদেশ 3 May 2019 ৩০৫

ঢাকা।।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’র সার্বিক বিষয় সার্বক্ষণিক মনিটরিং করছেন বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম এবং আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ

বাংলাদেশে দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগ সরকারের ক্ষমতাকালে বিভিন্ন মানবসৃষ্ট ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেসব সরাসরি মনিটরিং করে থাকেন বলে প্রধানমন্ত্রীর নিজস্ব সূত্র এবং সংবাদমাধ্যমগুলোতে প্রকাশ। এরই প্রেক্ষিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এবার প্রশ্ন তোলা হয়, প্রধানমন্ত্রী এখন লন্ডনে। তাহলে এখন ‘ফণি’ মনিটরিং করবে কে?

সে প্রেক্ষিতেই একটি সংবাদ মাধ্যম নিউজ করে, “লন্ডন থেকে ফণি মনিটর করছেন প্রধানমন্ত্রী”। প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিমের বরাত দিয়ে তারা লিখেন, “সরকারি সফরে বর্তমানে লন্ডনে অবস্থানরত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’ শুক্রবার বিকেলে বাংলাদেশ উপকূলে আঘাত হানার আশঙ্কার প্রেক্ষাপটে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সকল পূর্ব সতর্কতামূলক পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’ আঘাত হানলে জানমালের ক্ষয়ক্ষতি কমানোর জন্য সকল বিভাগকে সব ধরনের পূর্ব সতর্কতামূলক পদক্ষেপ গ্রহণের এবং সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। খবর: বাসস। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী ব্রিটের রাজধানী থেকে ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কা থেকে উদ্ভূত পরিস্থিতি সার্বক্ষণিকভাবে মনিটর করছেন।”

এদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’র সার্বিক বিষয় সার্বক্ষণিক মনিটরিং করছেন বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফও। তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় সর্বাত্মক প্রস্তিুত রয়েছে সরকার ও আওয়ামী লীগের। ইতোমধ্যেই সরকারের পক্ষ থেকে অনেক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে প্রশাসনকে সহযোগিতা করার।’

শুক্রবার (৩ মে) আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডি কার্যালয়ে ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’ নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় আওয়ামী লীগের ত্রাণ উপকমিটির সদস্যরা সেখানে উপস্থিত ছিলেন। তারা সার্বিক সহযোগিতার জন্য প্রস্তুত রয়েছেন বলেও জানান তিনি।

হানিফ বলেন, ‘ইতোমধ্যে উপকূলবর্তী জেলাগুলোর কর্মকর্তাদের সঙ্গে সরকারের শীর্ষ কর্মকর্তারা বৈঠক করেছেন। নৌ ও পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সব কর্মকর্তার ছুটি বাতিল করা হয়েছে। নৌপথগুলোতে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। সাইক্লোন সেন্টার প্রস্তুত রাখা হয়েছে। মেডিক্যাল টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ত্রাণ হিসেবে শুকনো খাবার, বিশুদ্ধ পানি ও ওষুধ মজুত রাখা হয়েছে। এমনকি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের কাছে নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে, যাতে আক্রান্ত ব্যক্তিরা প্রয়োজনে স্কুলগুলোতে আশ্রয় নিতে পারেন। এছাড়া উপকূলবর্তী জেলাগুলোতে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে মাইকিং করা হচ্ছে।’

আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক বলেন, ‘সম্ভাব্য দুর্যোগ মোকাবিলায় আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের সমন্বয়ে একটি মনিটরিং কমিটি করা হয়েছে। তথ্য আদান-প্রদানের জন্য একটি মনিটরিং সেল গঠন করা হয়েছে। কেন্দ্রেও কিছু ত্রাণ ও মেডিক্যাল টিম প্রস্তুত রয়েছে। এছাড়া বরিশাল, খুলনা ও চট্টগ্রামের জন্য তিনটি বিভাগীয় কমিটিও করা হয়েছে। এসব বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদকরা এই কমিটির সমন্বয় করবেন।’

‘দুর্যোগ মোকাবিলায় বৈঠক না করেই প্রধানমন্ত্রী বিদেশ গেছেন’ বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর এমন বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে হানিফ বলেন, ‘দায়িত্বজ্ঞানহীনতা থেকে তিনি এটা বলেছেন। এটি উন্মাদের প্রলাপ। এমন মন্তব্য করে তিনি নোংরা রাজনীতির পরিচয় দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী সব নির্দেশনা দিয়েই লন্ডন গেছেন। সেখান থেকে সার্বক্ষণিক সব মনিটরিং করছেন।’

এ সময় হানিফ তথ্য আদান-প্রদানের জন্য দুটি নম্বর দেন। যেখানে ফোন করে যে কেউ তথ্য জানাতে ও জানতে পারেন। নম্বর দুটি হলো—৯৬৭৭৮৮১ ও ৯৬৭৭৮৮২। এছাড়া একটি ফ্যাক্স নম্বর দেওয়া হয়। নম্বরটি হলো—৯৬৬৬৫৫০।

সংবাদ সম্মেলনের আগে হানিফের সভাপতিত্বে দলের সম্পাদকমণ্ডলীর বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন—দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক বাহাউদ্দিন নাসিম, আহমদ হোসেন, ত্রাণ ও দুর্যোগবিষয়ক সম্পাদক সুজিত নন্দি রায়, বন ও পরিবেশ সম্পাদক দেলওয়ার হোসেন, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস, সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক শামীম, মহিবুল হাসান নওফেল, কৃষি সম্পাদক ফরিদুন নাহার লাইলী, নির্বাহী সদস্য এসএম কামাল হোসেন, আমিরুল আলম মিলন, আনোয়ার হোসেন প্রমুখ।