
ব্রাক্ষণবাড়িয়া।।
নাম আসমা আক্তার, বয়স ১৮ বছর। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলার পাহাড়পুর ইউনিয়নের শ্যামপুর গ্রামের জামাল উদ্দিনের মেয়ে। অর্থের অভাবে জীবন প্রদীপ নিভতে বসেছে তার। হার্টের ভাল্ব নষ্ট হয়ে যাওয়ায় গত দুই মাস ধরে হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে মৃত্যুর প্রহর গুনছেন আসমা।
আজ থেকে চার বছর আগে ২০১৫ সালে একই উপজেলার সিঙ্গারবিল ইউনিয়নের নলগরিয়া গ্রামের মৃত নেহের আলীর ছেলে আব্দুল কুদ্দুসের সঙ্গে তার পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ে হওয়ার কয়েকদিন পর কুদ্দুস প্রবাসে ফিরে যান। এর পর থেকেই চলে তার উপর শ্বশুরবাড়ির লোকজনের শারীরিক-মানসিক নির্যাতনই ।আসমা ও তার পরিবারের লোকজন থেকে জানা যাই যৌতুকের জের ধরে চলে তার উপর এই নির্মম নির্যাতন, এখন তাকে বাচাতে মরিয়া হয়ে উঠেছে তার পরিবারের লোকজন। তার পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসার জন্য প্রয়োজন চার থেকে পাচঁ লাখ টাকা। কিন্তু স্বামী ও শশুড় বাড়ির লোকজন সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ রাখায় চিকিৎসার টাকা জোগাড় হচ্ছে না। আর আসমার দরিদ্র বাবার পক্ষে এই টাকার যোগান দেয়া অসম্ভব।
তার গরীব কৃষক দিনমজুর বাবা জানান বিয়ের সময় তাদের কিছু দাবি ছিল না আমাদের কাছে। বিয়ের পর কুদ্দুসের একটি ঘর দুই লাখ টাকা খরচ করে আসবাবপত্র দিয়ে সাজিয়ে দেয়ার পরও আমার মেয়ের উপর তারা নির্যাতন চালিয়ে যায় । নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের ব্যবহার সীমাবদ্ধ করে দেয়া হয় বলে জানান তারা। পাশাপাশি আসমা অসুস্থ হতে পারবে না, আর অসুস্থ হলেও ডাক্তার-ও ষুধের খরচ তার পরিবারকে বহন করতে হবে বলে জানিয়ে দেয় আসমার শশুড়বাড়ির লোকজন।
কিন্তু দীর্ঘদিন এই নির্মম নির্যাতনের কারণে অসুস্থ হয়ে পড়ে আসমা। তার এই অসুস্থার খবর জানার পরে একদিন তার বড় ভাইন মহিন উদ্দিনকে ফোন করে আসমার স্বামী কুদ্দুস জানায় তিনি আসমার সঙ্গে আর সংসার করবেন না। মহিন তাকে বুঝানোর চেষ্টা করলেও তিনি আসমাকে বাড়ি থেকে নিয়ে যেতে বলেন।
পরবর্তীতে বেশি অসুস্থ হয়ে পড়লে আসমাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদর হাসপাতালে আনার পর চিকিৎসক তাকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার পারমর্শ দেন। ঢাকার চিকিৎসকের পরীক্ষা-নীরিক্ষার পর জানা যায় আসমার হার্টের ভাল্ব নষ্ট। পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসার জন্য চার থেকে পাচঁ লাখ টাকা প্রয়োজন। কিন্তু আসমার কৃষক বাবার পক্ষে এই টাকার যোগান দেয়া কিছুতেই সম্ভব না। বর্তমানে ঢাকার ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতালে মৃত্যুর প্রহর গুণছে আসমা। তার চিকিৎসার জন্য বিত্তবানদের এগিয়ে আসার অনুরোধ জানিয়েছেন পরিবারের লোকজন।
আসমার বড় ভাই মহিন উদ্দিন জানান, আমি পড়াশুনা করি। আমার বাবা একজন দরিদ্র কৃষক। বাবা যতটুকু পেরেছেন চিকিৎসা করিয়েছেন। কিন্তু চার লাখ টাকা খরচ করে চিকিৎসা করানো আমাদের পক্ষে সম্ভব না। অল্প বয়সেই যেন আমার বোনের জীবন প্রদীপ নিভে না যায় সেজন্য বিত্তবানদের কাছে সাহায্যের আবেদন জানাচ্ছি। সবাই মিলে পাশে দাঁড়ালে আমার বোন বেঁচে যাবে।