আমরা সময়ের কথা সময়ে বলি।

Advertisement

বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষক-কর্মচারী কল্যাণ ট্রাস্টের শত শত কোটি টাকা লোপাট

জাতীয় 18 May 2019 ৫০৫

ঢাকা।।

বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষক-কর্মচারী কল্যাণ ট্রাস্টের জন্মের পর থেকে এ পর্যন্ত কত টাকা কতজনকে দেয়া হয়েছে এবং কত টাকা কোন হিসেবে জমা রয়েছে ইত্যাদি বিষয়ে তথ্য একদিনের মধ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে জমা দিতে বলা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে এ হিসেব চাওয়া হয়েছে বলে জানা যায়। কল্যাণ ট্রাস্টের সচিব অধ্যক্ষ মো: শাহজাহান আলম সাজুর কাছ থেকে হিসেবে পাওয়ার পর তা প্রধানমন্ত্রীর অফিসে পাঠাবে মন্ত্রণালয়। একাধিক কর্মকর্তা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। একইসাথে যৌক্তিকতাসহ ট্রাস্টের অর্থের চাহিদাও জানতে চাওয়া হয়েছে।মন্ত্রণালয়ের দেয়া নির্ধারিত ছকের এসব তথ্য মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগে পাঠাতে বলা হয়েছে কল্যাণ ট্রাস্টের সদস্য সচিবকে। জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে গত ২৪ এপ্রিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো এক চিঠিতে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত ট্রাস্টের তথ্য চাওয়া হয়। সে প্রেক্ষিতে এ তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়
মুগিস মাহমুদ এখনো ধরা ছোঁয়ার বাইরে ?
এদিকে কল্যাণ ট্রাস্টের টাকা লুটকারী সদস্য-সচিবদের অন্যতম রাজধানীর আল হেরা কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ চৌধুরী মুগিস উদ্দিন মাহমুদের শাস্তি দাবি করেছেন অবসর ও কল্যাণের টাকার জন্য বছরের পর বছর অপেক্ষা করা শিক্ষকরা। ২০০৬ খ্রিষ্টাব্দ থেকে পরবর্তী তিন বছর তিনি কল্যাণ ট্রাস্টের সদস্য-সচিব ছিলেন। শিক্ষকদের জমানো দুশো কোটি টাকা সোনালী ব্যাংক থেকে সরিয়ে বিতর্কিত ওরিয়েন্টাল ব্যাংকে জমা করে নিজে লাভবান হয়েছেন তিনি। দুর্নীতির দায়ে বাংলাদেশ ব্যাংক ওরিয়েন্টাল ব্যাংকটি বন্ধ করে দেয়। মুগিস মাহমুদ গত বছর আগস্টে অবসরে যান। হাজার হাজার শিক্ষক যখন অবসর ও কল্যাণের টাকার জন্য বছরের পর বছর অপেক্ষা করছেন ঠিক তখন এই মুগিসের বাসায় কল্যাণ ট্রাস্টের চেক পৌঁছে দেন কল্যাণের বড় কর্মকর্তারা। অবসরের এক অফিসে ঘুরতে ঘুরতে জুতা ক্ষয় হচ্ছে কিন্তু টাকা পাচ্ছি না। অথচ কাজী ফারুক, মুগিস মাহমুদ, সেলিম ভূঁইয়ারা কল্যাণ ট্রাস্টের সদস্য সচিব থাকাকালে এই ফান্ডের কোটি কোটি টাকা বিভিন্ন বেসরকারি ব্যাংকে জমা রেখে সুদ খেয়েছেন। মুগিস মাহমুদের জমানায় কোন ব্যাংকে কত টাকা ছিল এবং সুদের টাকা কোথায় গেল তা অনুসন্ধান করতে দুর্নীতি দমন কমিশন ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ জানান ভুক্তভোগী মোস্তফা কামাল। জানা যায়, ২০০৭ খ্রিষ্টাব্দে মুগিস মাহমুদের অঢেল সম্পদের উৎস অনুসন্ধান শুরু হয়। দেখা যায় সাবেক ওরিয়েন্টাল ব্যাংকে [বর্তমানে আইসিবি ব্যাংক] মুগিসের ১৭টি অ্যাকাউন্ট রয়েছে। ওইসব অ্যাকাউন্টে কল্যাণ ট্রাস্টের টাকাও জমা ছিল। ২০০৭ খ্রিষ্টাব্দে মুগিস মাহমুদ কিছুদিন ভারতে পালিয়ে ছিলেন বলে জানা যায়। তিনি অবসর ও কল্যাণের সাবেক সদস্য সচিব ও বিএনপির নেতা এবং বরখাস্ত হওয়া অধ্যক্ষ মো. সেলিম ভূঁইয়ার অনুসারী হিসেবে শিক্ষক মহলে পরিচিত। মাসের মধ্যে কল্যাণ সুবিধা পান অঢেল টাকার মালিক ও রিয়েলে এস্টেট ব্যবসায়ী অধ্যক্ষ মুগিস মাহমুদ। তার শাস্তি দাবি করেছেন বছরের পর বছর টাকা না পাওয়া শিক্ষকরা। কল্যাণ ট্রাস্টের লুট করা টাকা উদ্ধার করে দ্রুত শিক্ষকদের দিয়ে দেয়ারও দাবি জানিয়েছেন তারা। ভুক্তভোগী অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মোস্তফা কামাল বলেন, কল্যাণ ট্রাস্টের
কল্যাণ ট্রাস্টের প্রাথমিক তহবিলের এক কোটি টাকার হদিস নেই
বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারী কল্যাণ ট্রাস্টের জন্মলগ্ন থেকে কোটি কোটি টাকা লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের ৫ সদস্যের একটি তদন্ত দল প্রথমবারের মতো কল্যাণ ট্রাস্টের দুর্নীতির তদন্ত করে ২০০২ খ্রিষ্টাব্দে। ১৯৯০ থেকে ২০০২ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত ঘটে যাওয়া লুটপাটে জড়িত অনেক শিক্ষক নেতা ও কল্যাণ ট্রাস্টের সদস্য-সচিব এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তা। ১৯৯৭ থেকে ২০০১ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত কল্যাণ ট্রাস্টের সদস্য-সচিব ছিলেন অধ্যক্ষ কাজী ফারুক আহমেদ।
ট্রাস্টের প্রাথমিক তহবিল গঠন বাবদ ১ কোটি টাকার হিসাব না পাওয়া প্রসঙ্গে:
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরে রেকর্ডপত্র যাচাইয়ে দেখা যায় ট্রাষ্টের প্রাথমিক তহবিল গঠন করার জন্য সরকার থেকে এক কোটি টাকা পাওয়ার কথা উল্লেখ আছে। ১৯৯৯ খ্রিষ্টাব্দের ১৪ জুন দৈনিক প্রথম আলোতে ‘বেসরকারী শিক্ষক কর্মচারী কল্যাণ ট্রাস্ট্রে এক কোটি টাকার হদিস নাই’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। তদন্ত দলও ১ কোটি টাকা প্রাপ্তি ও জমার কোনো রেকর্ড পায়নি। তাছাড়া নথিতে উক্ত টাকা পরবর্তী সময়ে পাওয়া যায় নি। এ ধরনের কোনো রেকর্ড ও সিদ্ধান্ত নেই। এক কোটি টাকার বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করে রেকর্ডপত্র সংগ্রহ করে ব্যবস্থা গ্রহণের পরামর্শ দেয়া গেল।তবে, অনুসন্ধানে জানা যায়, তদন্ত প্রতিবেদনের সুপারিশের পর ১৬ বছর পার হয়ে গেলেও কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।
সরকারের দেয়া ২৯ কোটি টাকা চলতি হিসাবে কেন?
রেকর্ডপত্র যাচাইয়ে দেখা যায় সরকার ১৯৯৪ খ্রিষ্টাব্দের ২৫ জুন ১৪ কোটি টাকা এবং ১৯৯৫ খ্রিষ্টাব্দের ১৪ জুন ১৫ কোটি। এই মোট ২৯ কোটি টাকা সরাসরি এফডিআর না করে ভাইস প্রেসিডেন্ট ও মহাপরিচালক একক ব্যাংক হিসাব নং ৯৮৮ তে জমা করা হয়। দীর্ঘ সময় উক্ত হিসাবে রাখার পর পরবর্তী সময়ে ১৯৯৮ খ্রিষ্টাব্দের ফেব্রুয়ারিতে এফডিআর করা হয়। চলিত হিসাব রাখার ফলে ব্যাংক লাভবান হয়েছে অথচ কল্যাণ ট্রাস্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। নিরীক্ষার সময় উক্ত টাকা জমার ব্যাংক স্লিপ এবং ব্যাংক বিবরণী চেয়েও পাওয়া যায়নি। শুধু সর্বশেষে এফডিআর ভাঙানো ও ২০০২ খ্রিষ্টাব্দে চলতি হিসাব ফের স্থানান্তরের ব্যাংকের পত্র তদন্ত দলকে দেখানো হয়।এ অনিয়মের ফলে ট্রাস্ট্রের বিপুল আর্থিক ক্ষতি হয়েছে বলে নিরীক্ষা দল মন্তব্য করেন।
কর্তন করা ২ শতাংশ হারে কল্যাণ তহবিলের টাকা কম জমার কারণ কি?
নিরীক্ষাকালে রেকর্ডপত্র যাচাইয়ে দেখা যায় জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ৬ মাসে ২ শতাংশ হারে শিক্ষক কর্মচারীদের অনুদান হতে ৩ কোটি ১২ লাখ ৪০ হাজার ৮৬০ টাকা কর্তন করা হয়। এ টাকার মধ্যে ১৯৯১ খ্রিষ্টাব্দের ২৪ জানুয়ারি ৩ কোটি ১২ লাখ টাকা এফডিআর করা হয়। অবশিষ্ট ৪০ হাজার ৮৬০ টাকার কোনো হিসাব পাওয়া যায়নি। এ ব্যাপারে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক বেগম রিজিয়া এবং সংশ্লিষ্ট কর্মচারীকে জিজ্ঞাসা করা হলে ওই টাকার কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করতে পারেননি। দায়ী ব্যক্তিদের কাছ থেকে উক্ত টাকা সুদসহ আদায়ের সুপারিশ করা হয়েছে তদন্ত প্রতিবেদনে।
কল্যাণ ট্রাস্টের টাকা কোন শিক্ষক নেতা কত মেরেছেন
বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারী কল্যাণ ট্রাস্ট ও অবসর সুবিধা বোর্ডের জন্মলগ্ন থেকে নানা ফন্দিফিকির করে কোটি কোটি টাকা লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ধীন পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের ৫ সদস্যের একটি দল প্রথমবারের মতো কল্যাণ ট্রাস্টের দুর্নীতির তদন্ত করে ২০০২ খ্রিস্টাব্দে। ১৯৯০ থেকে ২০০২ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত ঘটে যাওয়া লুটপাটের কাহিনীর সঙ্গে জড়িত অনেক শিক্ষক নেতা ও কল্যাণট্রাস্টের সদস্য-সচিব। ১৯৯৭ থেকে ২০০১ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত সদস্য-সচিব ছিলেন কাজী ফারুক আহমেদ। এই সময়ে লুটপাট বেশি হয়েছে। ১৫ পৃষ্ঠার তদন্ত প্রতিবেদনের শুরুতেই ‘সার্বিক পর্যালোচনায়’ বলা হয়: “বর্তমান নিরীক্ষাদল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক কর্মচারীগণের আবেদনগুলি পূর্বের ন্যায় অগোছালো অবস্থায় পায়। বর্তমান সদস্য-সচিব কর্তৃক তার সময়কালের রেকর্ডপত্র যথা ক্যাশ বই, বিলভাউচার, নথি ইত্যাদি যথাযথভাবে সংসক্ষণ করতে দেখা যায়। পূর্বের সদস্য-সচিবের সময়কালের লেনদেনের জন্য কোন ক্যাশ বই, প্রাপ্তি ও পরিশোধ হিসাব, স্থিতিপত্র কিছুই সংরক্ষন করেন নি। তাছাড়া প্রাপ্ত আবেদনপত্রগুলিও যথাযথভাবে সংরক্ষণ করেন নি। এমনকি দায়িত্ব হস্তান্তরকালে মোট প্রাপ্ত টাকা, পরিশোধত টাকা , উদ্বৃত্ত অর্থ এবং সমর্থনে ব্যাংক সনদপত্র, মোট ইসস্যূকৃত চেক ও টাকার পরিমান, অবশিষ্ট আবেদনপত্র চেক লেখা হয়েছে কিন্তু ইস্যু হয় নি, সেগুলির সংখ্যা ও টাকার পরিমান ইত্যাদি বিস্তারিত উল্লেখপূর্বক দায়িত্ব হস্তান্তর করেন নি। প্রতিবেদনে বলা হয়, ট্রাষ্টের তহবিল ভাইস প্রেসিডেন্ট ও মহাসচিব মাউশি অধিদপ্তর এবং সদস্য সচিবের যুগ্ম স্বাক্ষরে পরিচালিত হওয়ার কথা। কিন্তু শুধুমাত্র একটা ব্যাংক হিসাব ব্যতীত অন্যান্য হিসাব ও আমানত ভাইস প্রেসিডেন্টের একক স্বাক্ষরে পরিচালিত হয়েছে। মহাপরিচালক দায়িত্ব হস্তান্তরকালে বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক কর্মচারী কল্যাণ ট্রাষ্টের হিসাব ও উদ্বৃত্ত অর্থ ব্যাংক সনদসহ পরবর্তী মহাপরিচালককে হাস্তান্তর কেেরেছন এমন কোন প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তাছাড়া মহাপরিচালক অফিসে রেকর্ডপত্র চাইলেও সন্তোষজনক রেকর্ডপত্র সরবরাহ করতে পারে নি। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, নিরীক্ষাকালে বিভিন্ন রেকর্ডপত্র চেয়ে যেগুলো পাওয়া গেছে সেগুলো যাচাইয়ে যেসব অনিয়ম নিরীক্ষাদলের পক্ষে উদঘাটন করা সম্ভব হয়েছে এবং প্রযোজ্য বিধির আলোকে যে বিষয়গুলো অনিয়মিত ও বিধি বহির্ভূতভাবে চিহ্নিত হয়েছে তার ভিত্তিতে আপত্তিগুলো নিন্মে অনুচ্ছেদ আকারে লিপিবদ্ধ করা হল।
হাতে নগদ টাকা : নিরীক্ষাকালে ১/১০/২০০২ তারিখে সকাল ১০টায় হাতে নগদ ২১ হাজার ৮২৫ টাকা পাওয়া যায়। ৩০/৬/২০০২ তারিখে হাতে নগদ টাকার পরিমান ছিল ১ লাখ ৭৩ হাজার ৭৪৯ টাকা। বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষক ও কর্মচারী কল্যাণ ট্রাস্টের জারীকৃত প্রবিধানমালার ৭(৪) বিধিতে স্পষ্ট উল্লেখ আছে ট্রাস্টের দৈনন্দিন ব্যয় নির্বাহের জন্য অনধিক তিন হাজার টাকা রাখার বিধান আছে। এক্ষেত্রে উক্ত বিধি লংঘিত হয়েছে।
ব্যাংক উদ্বৃত্ত : নিরীক্ষাকালে ৩০/৯/২০০২ তারিখে লেনদেনের পর সোনালী ব্যাংক, তোপখানা শাখার চলতি হিসাব নম্বর ৩৩০০৯৮৮৮ তে ৬ কোটি ৬২ লাখ ১০ হাজার ৩২৯ টাকা এবং হিসাব নম্বর ৩৩০০১১০৮৪ তে উক্ত তারিখে ৬ কোটি ২৬ লাখ ৬৯ হাজার, ৯৭৯ টাকা জমার ব্যাংক প্রত্যয়ন পাওয়া যায়।দ্বিতীয়তঃ সোনালী ব্যাংক তোপখানা শাখা পত্র নং সুপ্রীম/স্থায়ী আমানত /১১১ তাং ২০/০১/০২ মোতবেক অবসর প্রকল্প নামের চলতি হিসাব নং ৩৩০১১৩০৮ তে ৪০ কোটি ১ লাখ ১০ হাজার ৬০১ টাকা জমার প্রমাণ পাওয়া যায়। কল্যান ট্রাস্টের যাবতীয় টাকা স্থায়ী হিসাবে জমা না করে কোটি কোটি টাকা চলতি হিসবে রাখা হচ্ছে। ফলে ট্রাস্ট সুদ বাবদ লক্ষ লক্ষ টাকা হতে বঞ্চিত হচ্ছে। অথচ কল্যাণ ট্রাস্ট আইন ও প্রবিধান এ ট্রাস্টের যাবতীয় টাকা লাভজনক হিসাবে জমা রাখার উল্লেখ আছে। ইহা গুরুতর অনিয়ম। এজন্য সংশ্লিষ্ট ভাইস চেয়ারম্যান ও মহাপরিচালকগণ দায়ী।বিষয়টির প্রতি মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হল।তদন্তকারী ডিআইএ কর্মকর্তারা হলেন: ডিআইএর তৎকালীণ উপ-পরিচালক মো. আবদুর রাজ্জাক, শিক্ষা পরিদর্শক মো. সাইফ উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী, অডিট অফিসার চৌধুরী নাসিরুজ্জামান, মো. আব্দুল গফুর ও সঞ্জয় বরণ মিস্ত্রী। অবসর বোর্ডের যে ৪০ কোটি ১ লাখ ১০ হাজার ৬০১ টাকা চলতি হিসাব নম্বর ৩৩০১১৩০৮-এ জমা আছে সেই টাকা এফডিআর করা হলে টাকার পরিমাণ বৃদ্ধি পেত এবং বোর্ড লাভবান হতো। বিষয়টির প্রতি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে রিপোর্টে। এছাড়া জনতা ব্যাংক তোপখানা রোড শাখায় সঞ্চয়ী হিসাব নম্বর ১৫৯৪৪ এবং বর্তমান হিসাব নং ০১৩৬৩৪০৪৫৯৮২ তে জমাকৃত ১ লাখ ১৬ হাজার ৬৫০ টাকার ব্যাংক সনদ/পাস বই পাওয়া যায়নি। এ ব্যাপারে সহকারী পরিচালক বেগম রিজিয়াকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি জানান, সংগ্রহ করে পরে দেখানো হবে বললেও তিনি আর দেখাননি বা প্রত্যয়ন হস্তান্তর করেননি। অতি তাড়াতাড়ি প্রত্যয়নপত্র সংগহ করে মন্ত্রণালয়ে পাঠাতে বলা হয়েছে রিপোর্টে।
কল্যাণ ট্রাস্টের সদস্য-সচিবের জন্য কেনা হচ্ছে ৬০ লাখ টাকার গাড়ি
বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারী কল্যাণট্রাস্টের সদস্য-সচিবের ব্যবহারের জন্য একটি পাজেরো গাড়ী কেনার সিদ্ধান্ত হয়েছে। গত ৯ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত ৯ম ট্রাস্টি বোর্ডের ৮ম ও শেষ সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। সভায় উপস্থিত ছিলেন সদস্য-সচিব অধ্যক্ষ মো: শাহজাহান আলম সাজুসহ বোর্ডের ২১ জন সদস্য। গাড়ী কেনার প্রস্তাবনায় বলা হয়, ‘কল্যাণট্রাস্টের সদস্য-সচিব পদটি সম্মানিত পদ। এছাড়াও কল্যাণট্রাস্টের অর্গানোগ্রামে সদস্য-সচিবের জন্য পাজেরো গাড়ি বরাদ্দ থাকায় ট্রাস্টি বোর্ডের সবাই সদস্য-সচিবের জন্য গাড়ি কেনার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।’ মন্ত্রণালয় ও কল্যাণট্রাস্টের সদস্য-সচিবের জন্য পাজেরো গাড়ির দাম কমপক্ষে ৬০ লাখ টাকা হতে পারে। উল্লেখ্য, কল্যাণট্রাস্ট এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের চাঁদার টাকায় চলা একটি প্রতিষ্ঠান।