আমরা সময়ের কথা সময়ে বলি।

Advertisement

মুকাই আলীর বাড়ীতে ভুড়িভোজ করে সমালোচনার মুখে আওয়ামীলীগের নেতারা

রাজনীতি 28 November 2019 ৫৭৯

ব্রাক্ষনবাড়িয়া।।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নাছিমা মুকাই আলীর বাড়িতে একটি ‘বিরোধ নিষ্পত্তির’ সভায় গিয়ে ভুড়িভোজ করে সমালোচনার মুখে পড়েছেন আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা। নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর হারের পর স্বতন্ত্র প্রার্থীর বাড়িতে ভুড়িভোজ করার বিষয়টিকে ‘কাটা ঘায়ে নুনের ছিটা’ হিসেবেই দেখছেন সবাই।বুধবার (২৭ নভেম্বর) দুপুরে জেলা শহরের হালদারপাড়া এলাকায় নাছিমা মুকাই আলীর বাসভবেন ওই ভুড়িভোজের আয়োজন করা হয়। এতে অংশ নেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন সরকার, বিজয়নগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জহিরুর হক ভূইয়াসহ আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন নেতা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাদের ভুড়িভোজের ছবি ছড়িয়ে পড়ার পরই সমালোচনা শুরু হয়। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ১৮ জুন বিজয়নগর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী অ্যাড. তানভীর ভূইয়াকে পরাজিত করে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন স্বতন্ত্র প্রার্থী নাছিমা মুকাই আলী। ওই নির্বাচনে নৌকা প্রতিকে তানভীর ভূইয়া পান ২৬ হাজার ১০১ ভোট আর ঘোঢ়া প্রতীকে নাছিমা মুকাই আলী পান ৩৩ হাজার ৪৭৮ ভোট। দলীয় প্রার্থীর হার এবং কিছু নেতার ভূমিকা নিয়ে গত ২১ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত বিজয়নগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর ও বিজয়নগর) আসনের সংসদ সদস্য র.আ.ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন, নির্বাচনে নৌকার জন্য কতজনকে অনুরোধ করেছি মনে নেই আপনাদের? আজকে হাজার-হাজার লোক স্লোগান দিয়েছেন, আপনারা নির্বাচনের দিন কোথায় ছিলেন? যদি নৌকার জন্য খেটে থাকেন তাহলে কোথায় গেল ভোট? দিনের বেলা নৌকা আর রাতের বেলা ঘোড়া? সবাই নৌকা মার্কার সমর্থক কিন্তু ভোটের বাক্সে শুধু ঘোড়া মার্কায় ভোট। মোকতাদির চৌধুরীর এমন ক্ষোভ প্রকাশের মধ্যেই স্বতন্ত্র প্রার্থী নাছিমা মুকাই আলীর বাড়িতে ভুড়িভোজে অংশ নিলেন। বিজয়নগর উপজেলার বুল্লা গ্রামের একটি বিল নিয়ে দ্বন্দ্ব নিরসনে বুধবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত সালিশ সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভার পর ভুড়িভোজের আয়োজন করা হয়। ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ওই ভুরিভোজের ছবিতে দেখা যায় নাছিমা মুকাই আলী নিজে দাঁড়িয়ে আওয়ামী লীগ নেতাদের তদারকি করে খাওয়াচ্ছেন। ভুড়িভোজে অংশ নেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন সরকার, বিজয়নগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জহিরুল হক ভূইয়া, বিজয়নগর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ও ইছাপুরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জিয়াউল হক বকুল, পাহাড়পুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ ও হরষপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সারোয়ার রহমানসহ আরও কয়েকজন।৪০ জনের জন্য আয়োজন করা ওই ভুরিভোজে ছিল ২০ পদের খাবার। এর মধ্যে পাঁচ পদের ভর্তা ও পাঁচ পদের মাছ ছাড়াও গরু, খাসি, মুরগি ও কবুতরের মাংস ছিল। সঙ্গে আরও ছিল দই, কোমল পানীয় ও ফলমূল। ভুড়িভোজের এই ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ার পরই শুরু হয় সমালোচনা ভুড়িভোজে দলীয় নেতাদের অংশ নেয়ার ব্যাপারে জানতে চাইলে অ্যাড. তানভীর ভূইয়া বলেন, ছবির নিচে অনেকেই কমেন্ট করেছে। আমি একটি কমেন্ট পড়েছি, যাতে বলা হয়েছে- এগুলোতো আগেও তারা করতো রাতের আধারে, এখন করে দিনের বেলায়। এটা নাকি রাজনীতির নিয়ম। ওনার (জহিরুল হক ভূইয়া) নিজের যে কেন্দ্র সেখানে ভোট ছিলো ১৮শ। আমি পেয়েছি ৯১ ভোট। আমি নির্বাচনের আগেও বলেছি, পরেও বলেছি- ঘোড়ার একটি গাড়ি সবসময় তার বাড়ির সামনে দাঁড়ানো থাকতো। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বিজয়নগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জহিরুল হক ভূইয়া বলেন, একটি বিরোধ নিষ্পত্তির সভা ছিল। এটা বিজয়নগরের কাজই, আমার ব্যক্তিগত কিছু না। নির্বাচনে বিরোধীতার অভিযোগ থাকলে জেলা ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ আছে, সেখানে তথ্য-প্রমাণসহ অভিযোগ করুক।