আমরা সময়ের কথা সময়ে বলি।

Advertisement

ব্রাহ্মণবাড়িয়া হাইওয়ে পুলিশের টোকেন বানিজ্য।। সিএনজি চালক-মালিক সমিতির ক্ষোভ

বিশেষ প্রতিবেদন, সরাইল, সারাদেশ 22 October 2021 ২৬৭

ব্রাহ্মণবাড়িয়া।।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সিএনজি অটোরিক্সায় টোকেন বিক্রি করে প্রতি মাসে লাখ লাখ টাকা আদায়ের অভিযোগ বিশ্বরোডস্থ খাঁটিহাতা হাইওয়ে থানা পুলিশের বিরুদ্ধে। সিএনজি চালক মালিক সমিতির সংগঠনের শ্রমিক নেতারা ২০ অক্টোবর বুধবার হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ এর সাথে আলোচনা কালে ক্ষোভ প্রকাশ করে টোকেনের টাকার একটি বড় অংশ পুলিশের পকেটে যাওয়ার দাবী করে, তবে পুলিশ এসব অস্বীকার করছে।
আলোচনাকালে সিএনজি অটোরিকশা মালিকরা জানান, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের বিশ্বরোড-সরাইল এলাকার প্রায় আধা কিলোমিটার রাস্তা দিয়ে এ রোডের সিএনজি চালকরা সরাইল,নাসিরনগর উপজেলা থেকে জেলা শহরে যাতায়াত করে। বর্তমানে মহাসড়কে সিএনজি অটোরিকশা চলাচলে নিষেধাজ্ঞার কারনে বিপাকে পড়েছে মহাসড়কের উপর দিয়ে চলাচল করতে বাধ্য এইসব এলাকার বাসিন্দারা। বাসিন্দাদের চলাচলের জন্য সিএনজি অটোরিকশাগুলো মহাসড়কে চলাচলের সুযোগ করে দিতে স্থানীয় এমপি,মন্ত্রী ও প্রশাসনের মৌখিক অনুমতি থাকলেও টোকেন চালু করেছে পুলিশ ও তাদের আশ্রিত দালালরা । এতে করে দালালদের ও পুলিশের পকেট ভারী হচ্ছে। কিন্তু আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন চালক ও মালিকেরা। হাইওয়ে থানার ওসির সাথে আলোচনা কালে সিএনজি চালক-মালিক সমিতির নেতা-কর্মীরা।
বিআরটিএ’র তথ্য মতে, রেজিষ্ট্রিকৃত সিএনজি অটোরিকশা রয়েছে ৫ হাজার ২শ ৫০ ও নম্বরবিহীন রয়েছে প্রায় ৬-৭ হাজার। বিআরটিএ যথাসময়ে রেজিষ্ট্রেশন দিতে না পারায় ‘পুলিশ টোকেন’ নামে চাঁদা আদায়ের ফন্দি বের করে হাইওয়ে পুলিশের নাম ভাঙ্গিয়ে প্রতিটি টোকেনের জন্য মাসিক হারে সিএনজি চালকদের কাছ থেকে টাকা নিচ্ছে তারা। জেলার ছয় উপজেলায় নম্বরবিহীন সিএনজি গাড়ীগুলো টোকেন ব্যবহার করে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। নম্বরবিহীন এসব সিএনজি অটোরিকশাগুলো অপরাধমূলক কাজ করে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত। নম্বর না থাকায় অপরাধ করে পার পেয়ে যাচ্ছে তারা। যার ফলে চিহ্নিত করা সম্ভব হচ্ছে না এসব চতুর অপরাধীদেরকে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সিএনজি মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক স্বপন মিয়া বলেন, রেজিষ্ট্রেশনকৃত সিএনজি অটোরিকশাগুলো মহাসড়ক পারাপারে পুলিশি হয়রানির শিকার হচ্ছে। তাই বাধ্য হয়ে অনেকে টোকেন ব্যবহার করছে। আবার কিছু কিছু সিএনজি চালক সিএনজি’র রেজিষ্ট্রেশন মেয়াদ শেষ হয়ে গেলেও নবায়ন করছে না। টোকেন দিয়ে চলছে। টোকেন ছাড়া রাস্তায় উঠলে সিএনজি অটোরিকশা চালকদেরকে ট্রাফিক পুলিশ ও হাইওয়ে পুলিশের হয়রানির শিকার হতে হয়। রেজিষ্ট্রেশন থাকার পরও হাইওয়ে পুলিশ, ট্রাফিক পুলিশ ও শহর পুলিশ ফাঁড়ির নানান হয়রানির শিকার হতে হয় চালকদের। গাড়ী আটক করে ৫ থেকে ৭ হাজার টাকার মামলা দিয়ে দেয়। মালিক সমিতির লোকজন তাদের বৈধ গাড়ির জন্য গেলেও পুলিশ নানা বাহানায় আটকে রাখে গাড়ি কিন্তু দালালদের মাধ্যমে ৩-৪ হাজার টাকার বিনিময়ে ছাড়িয়ে নেয়া যায় সে গাড়ি। তাই মালিক সমিতির বদলে দালালদের উপর আস্থা বাড়ছে চালকদের।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শ্রমিক লীগে সভাপতি এম এ মালেক চৌধুরী সিএনজি শ্রমিক-মালিক সমিতির পক্ষে বলেন, আমাদের যেইটুকু রাস্তায় চলার অনুমতি আছে ততটুকু ব্যবহারে আমাদের বাধাগ্রস্ত করবেন না। রেজিষ্ট্রেশনকৃত গাড়ি অহেতুক আটকিয়ে হয়রানি করবেন না। কেউ অন্যায় করলে শাস্তি দিবেন তবে বিনা অন্যায়ে অবিচার করবেন না। আমাদের যৌক্তিক দাবী গুলো না মানলে যে কোন সময় শ্রমিকেরা আন্দোলনে নেমে যেতে পারে তখন আইনের অবণতি ঘটলে আমাদের দোষারোপ করতে পারবেন না। কারণ শ্রমিকরা হালাল ভাবে উপার্জন করে পেট চালায় তাদের পেটে লাথি দিলে তা যেকোনো কিছুই করতে পারে।
খাঁটিহাতা থানার অফিসার ইনচার্জ মো: শাহজালাল আলম প্রথমে হাইওয়ে পুলিশ এসব টোকেন বাণিজ্যের সাথে জড়িত নয় বলে দাবী করেন।কিন্তু শ্রমিকদের দাবীর মুখে এবং প্রমাণাদি উপস্থাপন করলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে খোঁজ খবর নিয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।