আমরা সময়ের কথা সময়ে বলি।

Advertisement

সাংবাদিক রেজাউল করিমের জানাজা ও দাফন সম্পন্ন

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, সারাদেশ 3 February 2022 ২৪০

ব্রাহ্মণবাড়িয়া।।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর এলাকার কাজীপাড়ার বাসিন্দা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে প্রকাশিত সাপ্তাহিক তিতাস পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া রিপোর্টার্স ক্লাবের সভাপতি রেজাউল করিমের জানাজা নামাজ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (০৩ ফেব্রুয়ারি) ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ঈদগাহ ময়দানে বাদ জোহর অনুষ্ঠিত নামাজে জানাজায় সাংবাদিকমহল, রাজনীতিবীদ, সাংস্কৃতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দসহ কাজীপাড়ার সাধারণ মুসল্লীগণ উপস্থিত ছিলেন। পরে কাজীপাড়া মৌলভীহাটি কবরস্থানে তাঁর মরদেহ দাফন করা হয়।
সাংবাদিক রেজাউল করিম গত বুধবার সন্ধ্যা পৌনে সাতটার দিকে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৫৮ বছর। তিনি স্ত্রী, দুই ছেলে, ১ মেয়েসহ অসংখ্য আত্মীয় স্বজন রেখে গেছেন। রেজাউল করিম ছিলেন অসাম্প্রদায়িক চেতনায় উদ্বুদ্ধ ও সৃজনশীল মননের। ‘তিতাস’ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার প্রথম পত্রিকা। যা সাপ্তাহিক হিসেবে অনুমোদন লাভ করে। এই জেলার প্রথম পত্রিকা ‘তিতাস’ আত্মপ্রকাশের মধ্য দিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলাও এক গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়ে প্রবেশ করে। অনুসন্ধানী ও দুঃসাহসী বিভিন্ন প্রতিবেদনের মাধ্যমে তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পাঠকদের হৃদয়ে ব্যতিক্রমী স্থান করে নিয়েছেন। এই পত্রিকা থেকে পরবর্তীতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আরও বেশ কয়েকজন দক্ষ ও অদম্য সংবাদকর্মী তৈরি হয়। তাঁরাও আজ অনুকরণীয় সাংবাদিকতার মাধ্যমে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নিজ নিজ আসনে সমুজ্জ্বল। সাংবাদিকতার পাশাপাশি সাহিত্য চর্চায়ও মেধাবী সাংবাদিক রেজাউল করিম আগ্রহী ছিলেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ইতিহাস-ঐতিহ্য ও সাহিত্য চর্চায় তার লেখা কয়েকটি বইও প্রকাশিত হয়েছে। বইগুলোও পাঠকমহলে জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। তিনি সৃজনশীল কর্মকা-ে নিজেকে নিয়োজিত রেখেছিলেন। নিজের সাধ্যের মধ্য থেকেই তিনি নবীন সাংবাদিকদের জন্য যতটুকু সম্ভব করেছেন। তাঁর হাত ধরেই ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ‘ব্রাহ্মণবাড়িয়া রিপোর্টার্স ক্লাব’। যা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সাংবাদিকদের কল্যাণে কাজ করে আসছে।
এদিকে বৃহস্পতিবার বাদ যোহর ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ঈদগাহ ময়দানে অনুষ্ঠিত হয় জানাজা। জানাজাপূর্ব আলোচনায় বক্তব্য রাখেন ৮নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মীর মোঃ শাহীন, জেলা জাসদের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা এড. আখতার হোসেন সাঈদ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাবের সভাপতি রিয়াজ উদ্দিন জামি, জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি মজিবুর রহমান বাবুল, জেলা বিএনপি’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক জহিরুল হক খোকন, সাংবাদিক বাহারুল ইসলাম মোল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া রিপোর্টার্স ক্লাবের দপ্তর সম্পাদক সোহেল সরকার। পরিবারের পক্ষে বক্তব্য রাখেন মরহুমের বড় ছেলে মাজহারুল করিম অভি। জানাজায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ শফিকুল্লাহ, সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ এমরানুল ইসলাম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি খ.আ.ম রশিদুল ইসলাম ও সৈয়দ মিজানুর রেজা, জেলা উদীচী সভাপতি জহিরুল ইসলাম চৌধুরী স্বপন, প্রগতিশীল জোটের আহ্বায়ক কমরেড নজরুল ইসলামসহ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সাংবাদিকমহল, রাজনীতিবীদ, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। জানাজার নামাজ শেষে শ্রদ্ধা জানিয়ে মরহুমের কফিনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রিপোর্টার্স ক্লাবের পক্ষ থেকে ফুলেল শ্রদ্ধা জানানো হয়।
এদিকে তাঁর মৃত্যুতে গভীর শোক ও শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছেন বিভিন্ন মহল ও ব্যক্তি। বিবৃতিতে মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করা হয়।