
কক্সবাজার।।
দুর্ঘটনায় একসঙ্গে পরিবারের পাঁচ সদস্যকে হারিয়ে স্বজনদের আহাজারি। আজ মঙ্গলবার দুপুরে হাসিনাপাড়া গ্রামে
কক্সবাজার শহর থেকে প্রায় ৬৫ কিলোমিটার দূরে চকরিয়া উপজেলার ডুলাহাজারা ইউনিয়নের হাসিনাপাড়া গ্রাম। এই গ্রামের মাঝেই সুরেশ চন্দ্র সুশীলের টিনশেডের বাড়ি। গত ৩০ জানুয়ারি সুরেশ চন্দ্র মারা গেছেন। সুরেশের মৃত্যুর শোক এখনো ঠিকমতো কাটিয়ে উঠতে পারেনি তাঁর পরিবার। এর মধ্যেই আজ মঙ্গলবার আবার সুরেশের বাড়িতে কান্নার রোল পড়ে গেছে।আজ ভোরে পিকআপ ভ্যানের ধাক্কায় সুরেশের চার ছেলে নিহত হন। ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানের জন্য সুরেশের সাত ছেলে ও এক মেয়ে আজ ভোরে স্থানীয় একটি মন্দিরে যান। সেখান থেকে আট ভাইবোন একসঙ্গে বাড়ি ফিরছিলেন। পথে পিকআপের ধাক্কায় ঘটনাস্থলেই একসঙ্গে চারজনের মৃত্যু হয়েছে।পরে আজ বিকেলে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও একজন মারা গেছেন।নিহতরা হলেন অনুপম সুশীল (৪৭), নিরুপম সুশীল (৪৫), দীপক সুশীল (৪০), চম্পক সুশীল (৩০) ও স্মরণ সুশীল।আজ দুপুরে ওই বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, সুরেশের মৃত্যুর ১০ দিন পূর্ণ হওয়ায় আজ পারিবারিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। এ উপলক্ষে সুরেশের ছেলেমেয়েরা বাড়িতে এসেছিলেন। এর মধ্যে দুর্ঘটনায় মারা যাওয়া দীপক সুশীল বাবার মৃত্যুর খবর পেয়ে কাতার থেকে দেশে এসেছিলেন। আজ অনুষ্ঠান উপলক্ষে বাড়ির আঙিনায় শামিয়ানাও টানানো হয়েছিল। কিন্তু সেই শামিয়ানার নিচে কাপড় দিয়ে সুরেশের চার ছেলের লাশ মুড়িয়ে রাখা হয়েছে।লাশের পাশে বসে এক বৃদ্ধা বিলাপ করছিলেন। তাঁর নাম মানু রানী সুশীল (৭০)। নিহত ব্যক্তিরা সবাই তাঁর সন্তান। কাঁদতে কাঁদতে মানু রানী বলেন, ‘বাপ (সুরেশ) মারা গেল ১০ দিন। এই শোক কাটিয়ে না ওঠার আগেই আবার চার সন্তানকে কেড়ে নিলা। এ কোন পরীক্ষায় ফেললা ভগবান। বেঁচে থেকে আর লাভ কী! কার জন্য বাঁচিয়ে রাখলা ভগবান! যারা আমার ছেলেদের কেড়ে নিয়েছে, তুমি তাদের বিচার করো ভগবান।’সন্তানের লাশের পাশে আহাজারি থামছিল না মায়ের। প্রতিবেশী ও আত্মীয়স্বজনেরা তাঁকে বারবার শান্ত করার চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু মানু রানীর কান্না থামছেই না।