
ত্রিপুরা।।
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন,মহান মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা সংগ্রামে ভারতের ঐতিহাসিক অবদান বাংলাদেশ কখনো ভুলবে না। তা ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে লেখা রয়েছে। বাংলাদেশ ও ভারতের মানুষের মৈত্রী বন্ধন রক্তের অক্ষরে লেখা। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে দু’দেশের সম্পর্ক এখন অনন্য উচ্চতায় উল্লেখ করেন তিনি। আজ বুধবার (২৩ ফোব্রুয়ারি) সকালে আগরতলায় ‘দ্বিতীয় বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উৎসব’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তথ্যমন্ত্রী।
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে আগরতলায় বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশন আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন ত্রিপুরার তথ্য ও সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী, বাংলাদেশের সংসদ সদস্য মমতাজ বেগম, সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল, তথ্য ও সম্প্রচার সচিব মো. মকবুল হোসেন, দিল্লির বাংলাদেশ হাইকমিশনের উপ-হাইকমিশনার মো. নুরুল ইসলাম ও আগরতলায় বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনের সহকারী হাইকমিশনার আরিফ মোহাম্মদ।
তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, মুক্তিযুদ্ধকালে বাংলাদেশের এক কোটি মানুষ ভারতে আশ্রয় নিয়েছিল এবং বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে পাকিস্তান সরকারের ফাঁসির আদেশের পর তাকে মুক্ত করার জন্য তৎকালীন ভারত সরকার বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কূটনৈতিক তৎপরতা চালিয়েছিল। ভারতের এ অবদান আমরা কখনো ভুলবো না।ত্রিপুরার মানুষ তাদের রাজ্য এবং মনের দুয়ার দুটিই ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় অবারিত করে দিয়েছিলেন এবং বাংলাদেশ থেকে আসা লাখ লাখ শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়েছিলেন, যা তারা বোঝা মনে করেননি।
ত্রিপুরার মানুষ এবং তৎকালীন রাজ্য সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে ড. হাছান বলেন, ত্রিপুরাকে নিয়ে আমার আবেগ এবং উচ্ছ্বাস রয়েছে। আমরা দু’দেশের মানুষ হলেও আমাদের ভাষা এক, সংস্কৃতিরও মিল রয়েছে। আমরা একই পাখির কলতান শুনি।
ত্রিপুরার অনেকেই আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে অবদান রেখেছে তাদের অনেককেই বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে পুরস্কৃত করা হয়েছে। তাদের মধ্যে জীবিত এবং মৃত্যুবরণকারীদের পরিবারের সদস্যদের প্রতিও কৃতজ্ঞতা জানান সম্প্রচারমন্ত্রী।
এসময় মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের ফলে দু’দেশের শত্রুরা কখনো সফল হতে পারবে না। ৭১ সালে আমার জন্ম। সেকারণে বাংলাদেশের জন্মের সঙ্গে আমার জন্মের একটা ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে।মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে আমার প্রথম বিদেশ সফর হবে বাংলাদেশ।
আলোচনা শেষে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর জীবনভিত্তিক ‘হাসিনা: আ ডটারস টেল’ প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শিত হয় এবং বাংলাদেশ থেকে আগত শিল্পীরা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করেন।
এর আগে সকালে ড. হাছান মাহমুদ ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তরে তার সঙ্গে বৈঠকে দ্বিপাক্ষিক যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং সংস্কৃতি ও বাণিজ্য সম্পর্ককে আরও এগিয়ে নেওয়ার বিষয়ে আলোচনা করেন। এসময় ত্রিপুরা রাজ্যের উন্নয়ন এবং বাংলাদেশ-ভারতের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে আরও সুদৃঢ় করতে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রীর নানা উদ্যোগের প্রশংসা করেন তিনি। বৃহস্পতিবার তথ্যমন্ত্রী গৌহাটিতে দ্বিতীয় বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উৎসব উদ্বোধন করবেন।
আগরতলা ও গৌহাটি দুই শহরে দ্বিতীয় বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উৎসব উদ্বোধন ছাড়াও তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ ২৩ থেকে ২৬ ফেব্রুয়ারি ভারত সফরে আসামের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত বিশ্ব শর্মার সঙ্গে বৈঠক, গৌহাটিতে বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনে বঙ্গবন্ধু কেন্দ্র ও আসাম নেপাল মন্দিরে ইন্দো-বাংলা জামদানি প্রদর্শনী কেন্দ্র উদ্বোধন করবেন। ২৭ ফেব্রুয়ারি মন্ত্রীর ঢাকা ফেরার কথা রয়েছে।