আমরা সময়ের কথা সময়ে বলি।

Advertisement

বাঞ্ছারামপুরে শিক্ষকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ।।মানববন্দন বিদ্যালয় ভাংচুর

জাতীয়, বাঞ্ছারামপুর 21 March 2022 ৩০৮

বাঞ্ছারামপুর।।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার একটি বিদ্যালয়ের শিক্ষকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ তুলে বিদ্যালয়ে ভাংচুর করেছে। এ ঘটনার প্রতিবাদে আজ সোমবার স্থানীয় লোকজন ধরিয়ারচর হাজী উমর আলী উচ্ছ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষ থেকে ডেকে নিয়ে মানববন্ধন করেন। জানা গেছে, উপজেলার মানিকপুর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান ফরিদ উদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে ইউপি সদস্য গোলাম মোস্তফা, উপজেলা শ্রমিক লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মহিউদ্দিনসহ শতাধিক ব্যক্তি ওই বিদ্যালয়ে আসেন। এ সময় বিদ্যালয়ে পাঠদান চলছিল। বহিরাগত ব্যক্তিরা শিক্ষকদের শ্রেণিকক্ষ থেকে বের করে শিক্ষার্থীদের বাইরের মাঠে নিয়ে বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে দশম শ্রেণির এক ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ তুলে শিক্ষার্থীদের নিয়ে মানববন্ধন করায়। মানববন্ধন শেষে নবম ও দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ের হাসনাহেনা একাডেমিক ভবনের বিভিন্ন শ্রেণিকক্ষের দরজা-জানালা ভাঙচুর করে। এ সময় শিক্ষার্থীদের হাতে লাঠিসোঁটা ছিল। খবর পেয়ে বাঞ্ছারামপুর থানার পুলিশ ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এক সহকারী শিক্ষক শফিকুল ইসলাম বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রীকে বিয়ে করেছেন বলে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানতে পারে। এ ঘটনায় ১৭ মার্চ সন্ধ্যায় পরিচালনা পর্ষদের সভায় তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। পাশাপাশি ওই শিক্ষককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়। আজ সকালে ওই শিক্ষার্থীর পরিবারের দুই সদস্য বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দেন।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, ওই শিক্ষক প্রায় দেড় মাস আগে প্রাইভেট পড়ানোর সময় কক্ষে একা পেয়ে ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ করেন। এরপরও ওই ছাত্রীকে একাধিকবার ধর্ষণ করেন তিনি। আপত্তিকর ছবি মুঠোফোনে সংরক্ষণ করে ওই ছাত্রীকে বিভিন্ন সময় হয়রানি করেন অভিযুক্ত শিক্ষক। দশম শ্রেণির ওই ছাত্রীকে বিয়ে করেছেন বলেও প্রচার করেছেন।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমেনা বেগম বলেন, স্কুলশিক্ষক ও ছাত্রীর ঘটনা শুনে পরিবারের অভিযোগ পাওয়ার আগেই ১৭ মার্চ সন্ধ্যায় ঘটনা যাচাই করতে তদন্ত কমিটি গঠনসহ অভিযুক্ত শিক্ষককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে এবং এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে জানাতে আজ তিনি উপজেলা সদরে যান। সেখানে থাকা অবস্থায় জানতে পারেন, ইউপি চেয়ারম্যান ফরিদ উদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে স্থানীয় লোকজন বিদ্যালয়ে এসে শিক্ষার্থীদের নিয়ে মানববন্ধন করেন। পরে শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে ভাঙচুর চালিয়েছে বলে শিক্ষকেরা তাঁকে জানিয়েছেন।
ওই ছাত্রীর চাচা বলেন,অভিযুক্ত শিক্ষক তার ভাতিজিকে ফাঁদে ফেলে একাধিকবার ধর্ষণ করেছেন। পরে জোরপূর্বক তার কাছ থেকে নন–জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিয়েছেন। এখন ভাতিজিকে বিয়ে করেছেন বলে প্রচার করছেন।
মানিকপুর ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, স্কুলছাত্রীকে ওই বিদ্যালয়ের এক শিক্ষক একাধিকবার ধর্ষণ করেছেন। কিন্তু বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সব জেনেও শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেননি। ওই বিদ্যালয়ে আগেও এমন একটি ঘটনা ঘটেছে। তাই স্থানীয় লোকজন উত্তেজিত হয়ে শিক্ষকের বিচারের দাবিতে শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন করেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সৈয়দা শমসাদ বেগম বলেন, ঘটনা শুনে বাঞ্ছারামপুর থানার ওসিকে সঙ্গে নিয়ে ওই বিদ্যালয় পরিদর্শন করি। তবে কেউ কোন লিখিত অভিযোগ করেনি।