আমরা সময়ের কথা সময়ে বলি।

Advertisement

লাশ আটকিয়ে টাকা নেওয়ার অভিযোগ পুলিশের বিরুদ্ধে

নাছিরনগর, সারাদেশ 9 April 2022 ২৩৬

নাসিরনগর।।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে এক শিশুর লাশ আটক রেখে নিহতের পরিবারের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে উপজেলার চাতলপাড় পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের আইসি কাঞ্চন কুমার সিংহের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। পরিবার ও স্থানীয়রা জানান, বৃহস্পতিবার ভলাকুট ইউনিয়নের দুর্গাপুর গ্রামে দুপুরে আরিফা আক্তার নামে ১৫ মাস বয়সী এক শিশু বাড়ির পাশে ডুবায় পড়ে মারা যায়। পরে শিশুটির লাশ তার মা মারুফা বেগম স্থানীয়দের সহযোগিতায় উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে আসেন। স্থানীয় ক্লিনিকে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। পরে বিকালে লাশ দাফন করতে গেলে পুলিশ এসে বাধা দেয়। নিহত শিশুটির পরিবারের কোনো অভিযোগ না থাকলেও পুলিশ ময়নাতদন্ত ছাড়া লাশ দাফন করতে দেবে না বলে জানালে বিপাকে পড়ে নিহতের পরিবার।পরে চাতলপাড় পুলিশ ফাঁড়ির তদন্তকারী কর্মকর্তা কাঞ্চন কুমার সিংহ ২০ হাজার টাকার বিনিময়ে লাশ ময়নাতদন্ত না করে দাফন করার অনুমতি দেওয়ার কথা জানায়। পরে ওই পরিবারটি আট হাজার টাকা দিয়ে লাশ দাফন করে।নিহতের চাচা মো. বোরহান মিয়া অভিযোগ করে বলেন, বাজার থেকে কাফনের কাপড় নিয়ে এসে দেখি বাড়িতে ৫ জন পুলিশ। তারা লাশের ময়নাতদন্ত করতে বলে। তখন আমরা বলি আমাদের সন্তান পানিতে ডুবে মারা গেছে। আমাদের কারো বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগও নেই। তাহলে কেন লাশ ময়নাতদন্ত করতে হবে! তখন চাতলপাড় পুলিশ ফাঁড়ির তদন্তকারী কর্মকর্তা কাঞ্চন কুমার সিংহ বলেন, ময়নাতদন্ত ছাড়া লাশ দাফন করা যাবে না। কিছুক্ষণ পর ওই কর্মকর্তা বলেন, লাশ ময়নাতদন্ত করতে ২০ হাজার টাকা লাগবে। আমাদের ১৫ হাজার টাকা দিয়ে দাও তাহলে আর কোনো সমস্যা হবে না। তার হাতে আট হাজার টাকা আমি নিজ হাতে দেই। সে সময় সাবেক ইউপি সদস্য শাফি মাহমুদ ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।টাকার বিষয়ে শাফি মাহমুদের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, পরিবারটি পরে আমার কাছে এসেছিল। পরিবারটি গবিব বিধায় আমি চাতলপাড় পুলিশ ফাঁড়ির তদন্তকারী কর্মকর্তা কাঞ্চন কুমার সিংহকে ফোন করে বলি- পরিবারটি খুবই গরিব। আপনারা তো বিভিন্ন জায়গা থেকে অনেক টাকা কামান। এদের টাকাটা ফেরত দিয়ে দেন। তখন ওই কর্মকর্তা টাকা ফেরত দেওয়ার আশ্বাস দেন।লাশ আটক রেখে টাকা আদায়ের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তা কাঞ্চন কুমার সিংহ দাবি করেন, লাশের সুরতহাল রিপোর্টের কাগজ নাসিরনগর সদরে পাঠাতে নৌকা ভাড়া বাবদ এক হাজার টাকা নেওয়া হয়েছে। আট হাজার টাকা নেওয়ার অভিযোগটি মিথ্যা। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, সরাইল সার্কেল মো. আনিসুর রহমান বলেন, যদি টাকা নেওয়ার বিষয়টি সত্য হয়ে থাকে, তাহলে এটি পুলিশের জন্য লজ্জা এবং খুবই দুঃখজনক। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।