আমরা সময়ের কথা সময়ে বলি।

Advertisement

কালবৈশাখী ঝড়ে খোলা আকাশের নিচে ২০০ পরিবার

নাছিরনগর, সারাদেশ 12 April 2022 ২০৬
নাসিরনগর।।
স্বামী হারানো ষাটোর্ধ্ব বৃদ্ধ রাশেদার থাকার একমাত্র ঘরটি বিধ্বস্ত হয়েছে কালবৈশাখী ঝড়ে। এখন খোলা আকাশের নিচে বিধ্বস্ত ঘরের ধ্বংসাবশেষের পাশে বসে শুধুই বিলাপ করছেন। কোথায় থাকবেন, কীভাবে চলবেন- সেই দুশ্চিন্তা ভর করেছে তাকে। রাশেদার মতো এমন অনিশ্চয়তায় পড়েছেন আরও অনেকেই। সোমবার (১১ এপ্রিল) ভোর রাত থেকে সকাল পর্যন্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার ভলাকুট ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া কালবৈশাখী ঝড়ে অন্তত দুইশত পরিবার তাদের মাথা গুজার ঠাঁই হারিয়েছে। তারা সবাই এখন খোলা আকাশে  নিচে মানবেতর অবস্থায় আছেন।
স্থানীয়রা জানান, ভোররাত ৩টা থেকে কালবৈশাখী ঝড় শুরু হয়। সকাল পর্যন্ত চলা ওই ঝড়ে ভলাকুট ইউনিয়নের ভলাকুট, দুর্গাপু, কঠুই, খাগালিয়া ও বালিখোলাসহ বেশ কয়েকটি গ্রামের দুই শতাধিক ঘর-বাড়ি বিধ্বস্ত হয়। পাশাপাশি ভলাকুট ইউনিয়ন পরিষদের অস্থায়ী কার্যালয়, মসজিদ ও মাদরাসাও লন্ডভন্ড হয়ে যায় ঝড়ে। এছাড়া ঝড়ে ভেঙে পড়ে অসংখ গাছপালা ও কয়েকটি বিদ্যুতের খুঁটি। অনেকের ঘরেই খাবারের কিছু নেই। স্থানীয় প্রশাসনের তরফ থেকে এখনও কোনো ত্রাণ সহায়তা দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন ক্ষতিগ্রস্তরা।
ভলাকুট গ্রামের বাসিন্দা রেশম বেগম জানান, মাঝরাতে হঠাৎ দেখেন ঘরের চালা উড়ে যাচ্ছে। গোয়ালের গরু-বাছুরগুলোও উড়িয়ে নিচ্ছে কালবৈশাখী ঝড়। সবকিছু হারিয়ে এখন খোলা আকাশের নিচে মানবেতর অবস্থায় আছেন তারা। দুপুর পর্যন্ত কোনো খাবার জোটেনি। কেউ ত্রাণ নিয়ে আসেনি।আরেক ক্ষতিগ্রস্ত নারী মাহমুদা বেগম জানান, ঝড় তাদের ছোট্ট টিনের ঘরটি উড়িয়ে নিয়ে গেছে। বিধ্বস্ত ঘরের মালামালের ধ্বংসাবশেষ ছাড়া কিছুই অবশিষ্ট নেই। এখন স্বামী-সন্তান নিয়ে কোথায় যাবেন বুঝতে পারছেন না। কারও কাছ থেকে কোনো ত্রাণ সহায়তা পাননি বলে জানান তিনি।এদিকে, ঘটনার পর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ রুহুল আমিন ও নাসিরনগর উপজেলার ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা মেহেদী হাসান খান শাওন ক্ষতিগ্রস্ত ঘর-বাড়ি পরিদর্শন করেছেন। পরিদর্শন শেষে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ রুহুল আমিন বলেন, আমরা চেষ্টা করছি ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা আজকের মধ্যে তৈরি করে সরকারিভাবে সহযোগীতা পৌঁছে দেওয়ার জন্য। আর ঝড়ে জমির ফসলের যে ক্ষতি হয়েছে- সেটি নিরূপণের জন্য কয়েকদিন সময় লাগবে। এরপর সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জানানোর পর ক্ষতিপূরণ পেলে- ক্ষতিগ্রস্তদের কাছে সেটি পৌঁছে দেওয়া হবে।