
নবীনগর।।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে নৌকা ডোবানো সেই আ.লীগ নেতা এখনও স্বপদে বহাল। এই আ.লীগ নেতা হলেন স্থানীয় রতনপুর ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারন সম্পাদক গোলাম মোস্তফা ভিপি মারুফ। তিনি বিগত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আ.লীগ মনোনীত প্রার্থীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করেন। চেয়ারম্যান পদে জয়লাভও করেন। তিনিই এখন আবার ইউনিয়নে ওয়ার্ড আ.লীগের কমিটি গঠন করার উদ্যোগ গ্রহন করেছেন।এদিকে স্বয়ং কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও সম্প্রতি দলীয় এক বৈঠকে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে শুরু করে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে যারাই বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছিল, তাদের আওয়ামী লীগ ক্ষমা করবে না বলে সিদ্ধান্ত দিয়ে বলেছিলেন- দল করতে হলে সিদ্ধান্ত মানতে হবে। সিদ্ধান্ত না মানলে দল করার প্রয়োজন নেই। যারাই নৌকার বিরোধিতা করেছে তাদের দলীয় সব পদপদবি থেকে বহিষ্কার করতে হবে। এ অবস্থায় দলীয় প্রধানের সিদ্ধান্তকে সরাসরি অমান্য করে দলীয় পদ আকড়ে ধরে রাখা ওই নেতার ঔদ্বত্ব্যে হতাশ নবীনগরের স্থানীয় আ.লীগের নেতাকর্মীরা।জানা যায়, তৃতীয় ধাপে গত বছর ২৮ নভেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে রতনপুর ইউনিয়নে আ.লীগের দলীয় মনোনয়ন পান রতনপুর ইউনিয়ন আ.লীগের সভাপতি সৈয়দ জাহিদ হোসেন শাকিল। দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে ছিলেন রতনপুর ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা ভিপি মারুফ। নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে আ.লীগ প্রার্থী সৈয়দ জাহিদ হোসেন শাকিল পেয়েছিলেন ৬,৩৭৮। আর বিদ্রোহী প্রার্থী গোলাম মোস্তফা ভিপি মারুফ আনারস প্রতীকে ৬৭২৯ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছিলেন। ইউপি নির্বাচনের সময় বিদ্রোহী প্রার্থী গোলাম মোস্তফা ভিপি মারুফ’র বিরুদ্ধে স্থানীয় আ.লীগ নেতাকর্মীদের ভয়ভীতি ও হুমকি দেওয়া হয়েছিল নির্বাচন শেষ হলে তিনি দেখবেন, এমন একাধিক অভিযোগ ছিল তার বিরুদ্ধে। ফলে নৌকা পরাজিত হওয়ার পর আ.লীগ প্রার্থীর নির্বাচন করে বিপাকে স্থানীয় আ.লীগের নেতাকর্মীরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক আ.লীগ নেতাকর্মী জানান নৌকা ডুবিয়ে গোলাম মোস্তফা ভিপি মারুফ এখনও স্ব-পদে বহাল। ফলে আমরা যারা নৌকার নির্বাচন করেছিলাম খুবই বিপাকে আছি। এখন সে তার পছন্দের লোক দিয়ে ওয়ার্ড কমিটি করার পায়তারা করছে। এই সময় আ.লীগের নেতাকর্মীরা তাকে দ্রত এই পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া দাবি জানান।
প্রসঙ্গত, গত ৭ মে কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের কার্যনির্বাহী সভায় দলীয় সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন, ইউনিয়ন পরিষদ থেকে শুরু করে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে যারাই বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছিল, তাদের আওয়ামী লীগ ক্ষমা করবে না। যারা এখনো পদে আছেন, বহিষ্কার হননি তাদের সরিয়ে সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি গঠন করা হবে। বিদ্রোহী প্রার্থীদের প্রসঙ্গে কথা তোলা হলে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, দল করতে হলে সিদ্ধান্ত মানতে হবে। সিদ্ধান্ত না মানলে দল করার প্রয়োজন নেই। যারাই নৌকার বিরোধিতা করেছে তাদের দলীয় সব পদপদবি থেকে বহিষ্কার করতে হবে। যেখানে এখনো সম্মেলন হয়নি কিন্তু বিদ্রোহী ব্যক্তি দলীয় পদে আসীন আছে তাকে বাদ দিয়ে সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি করে সম্মেলন করতে হবে। কোনোভাবেই বিদ্রোহীদের মাফ করার সুযোগ নেই।
এই ব্যাপারে নবীনগর উপজেলা আ.লীগের সভাপতি ও সাবেক সাংসদ ফয়জুর রহমান বাদলের মুঠোফোনে একাধিক ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেননি।
তবে নবীনগর উপজেলা আ.লীগের দায়িত্বে থাকা জেলা আ.লীগের সাংগঠনিক টিমের দায়িত্বপ্রাপ্ত জেলা আ.লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল হান্নান রতন মুঠোফোনে জানান, আগামি ১৯ মে নবীনগর উপজেলা আওয়ামীলীগের বর্ধিত সভা। আমি তার বিষয়টি জেনেছি। সেখানে তার ব্যাপারে আলোচনা করা হবে।