অদ্য ২২/১২/২০১৮ ইং তারিখ বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের উদ্যোগে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী ইস্তেহার ও সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের আশা হতাশা ও নির্বচনী ভাবনা নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সাংবাদিক সংম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট এর মহাসচিব অ্যাডঃ গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক, আরো উপস্থিত ছিলেন হিন্দু মহাজোটের নির্বাহী সভাপতি অ্যাডঃ দীনবন্ধু রায়, সিনিয়র সহ সভাপতি ডাঃ মৃত্যুঞ্জয় রায়, সহ সভাপতি প্রদীপ কুমার পাল, মিঠু রঞ্জন দেব, প্রধান সমন্বয়কারী বিজয় ভট্টাচার্য, প্রেসিডিয়াম মেম্বার কালিপদ মজুমদার, যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডঃ লকি বাছার, অ্যাডঃ উদয় বসাক, হিন্দু সাংস্কৃতিক মহাজোটের সভাপতি সাধন লাল দেবনাথ, ঢাকা দক্ষিন হিন্দু মহাজোটের সদস্য সচিব শ্যামল ঘোষ, হিন্দু যুব মহাজোটের দপ্তর সম্পাদক জীবন কুমার রায়, হিন্দু ছাত্র মহাজোটের সভাপতি সাজেন কৃষ্ণ বল, সহ সভাপতি বাবুল কর্মকার, সাধারণ সম্পাদক হরেকৃষ্ণ বারুরী, রতন চন্দ্র মিস্ত্রি, উত্তম কুমার অধিকারী, শ্যামল চন্দ্র মিস্ত্রি প্রমূখ।অদ্য ২২/১২/২০১৮ ইং তারিখ বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের উদ্যোগে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী ইস্তেহার ও সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের আশা হতাশা ও নির্বচনী ভাবনা নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সাংবাদিক সংম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট এর মহাসচিব অ্যাডঃ গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক, আরো উপস্থিত ছিলেন হিন্দু মহাজোটের নির্বাহী সভাপতি অ্যাডঃ দীনবন্ধু রায়, সিনিয়র সহ সভাপতি ডাঃ মৃত্যুঞ্জয় রায়, সহ সভাপতি প্রদীপ কুমার পাল, মিঠু রঞ্জন দেব, প্রধান সমন্বয়কারী বিজয় ভট্টাচার্য, প্রেসিডিয়াম মেম্বার কালিপদ মজুমদার, যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডঃ লকি বাছার, অ্যাডঃ উদয় বসাক, হিন্দু সাংস্কৃতিক মহাজোটের সভাপতি সাধন লাল দেবনাথ, ঢাকা দক্ষিন হিন্দু মহাজোটের সদস্য সচিব শ্যামল ঘোষ, হিন্দু যুব মহাজোটের দপ্তর সম্পাদক জীবন কুমার রায়, হিন্দু ছাত্র মহাজোটের সভাপতি সাজেন কৃষ্ণ বল, সহ সভাপতি বাবুল কর্মকার, সাধারণ সম্পাদক হরেকৃষ্ণ বারুরী, রতন চন্দ্র মিস্ত্রি, উত্তম কুমার অধিকারী, শ্যামল চন্দ্র মিস্ত্রি প্রমূখ।লিখিত বক্তব্যে হিন্দু মহাজোরে মহাসচিব অ্যাডভোকেট গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক বলেন ১৯৪৭ সালের ভারত ভাগের ফলে এতদাঞ্চলের বসবাসরত হিন্দু সম্প্রদায় সংখ্যালঘুতে পরিণত হয়। সাম্প্রদায়িক পাকিস্থান প্রতিষ্ঠার পর পরই স্টেট এ্যকুজিশন এন্ড ট্যানান্সী এ্যাক্ট করে হিন্দু জমিদারদের জমিদারী কেড়ে নেওয়া হয়, সংসদে ৭২টি সংরক্ষিত আসন কেড়ে নিয়ে হিন্দুদের প্রতিনিধিত্ব ও নেতৃত্ব ধ্বংস করে দেওয়া হয়। অতপর ১৯৬৪ সালের সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় বিপর্যস্ত হয়ে এক কোটিরও বেশী হিন্দু দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। সরকার প্রথমে সে সব সম্পত্তি প্রথমে শত্রু সম্পত্তি পরে অর্পিত সম্পত্তি নাম দিয়ে দখল করে। আওয়ামীলীগ দেশ স্বাধীনের ডাক দিলে নির্যাতন নিপিড়নের হাত থেকে বাঁচার জন্য হিন্দু সম্প্রদায় আওয়ামীলীকে জেতানোর জন্য ১০০% ভোট প্রদান করে। স্বাধীনতার পর এই স্বাধীনতার স্বপক্ষের সরকারই হিন্দু সম্প্রদায়কে তাদের জমি জমা ভিটে মাটি থেকে বঞ্চিত করার জন্য শত্রু সম্পত্তি আইনকে পরিত্যাক্ত সম্পত্তি ঘোষনা করে বিভিন্ন ব্যক্তি প্রতিষ্ঠানের কাছে লীজ প্রদান করে। এরপর ১৯৭৩ সালের ১৩ মে বুলডোজার দিয়ে ধ্বংস করলো মুক্তিযুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্থ রমনা কালি মন্দির। দখল হয়ে গেল পূর্ব বঙ্গ স্বারস্বত সমাজ নামে হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়। এরপর ১৯৯০ সালে রামমন্দির বাবরী মসজিদকে কেন্দ্র করে সারা দেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের মঠ মন্দিরে বাড়ী ঘরে জ্বলে উঠলো আগুনের লেলিহান শিখা। ২০০১ ও ২০১৪ সালের নির্বাচন পরবর্তী কালে, যুদ্ধাপরাধী বিচারকালে এবং সম্প্রতি ফেসবুকে নবীর বিরুদ্ধে কটুক্তির অভিযোগে সারা দেশে ব্যাপকভাবে হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়ীঘরে অগ্নি সংযোগ, ভাংচুর লুঠপাট, নীরিহ পুরহিদের গলা কেটে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। বরাবরই এক পক্ষ অপর পক্ষের উপর দোষারোপ করে দায় সেড়েছে। ২০০১ সালের হিন্দু নির্যাতন বিশ্বব্যাপী আলোচিত হলেও তৎকালীন বিএনপি সরকার সেসব অপরাধীদের বিচার করে নাই, শাস্তিও দেয় নাই। বর্তমান সরকারী দল ২০০১ সালের হিন্দু নির্যাতনের ঘটনা দেশে বিদেশে ব্যপক প্রচার করে ক্ষমতায় বসার সিঁড়ি হিসেবে ব্যবহার করলেও গত ১০ বছর ক্ষমতায় থাকার পরও তারা কোন হিন্দু নির্যাতনকারীর শাস্তি দেয় নাই। শুধু তাই নয় বর্তমান সরকারকে ক্ষমতায় আনার জন্য ২০১৪ সালে হিন্দু সম্প্রদায় নজিরবিহিন ভূমিকা রাখে, কিন্তু তারপরও হিন্দু নির্যাতন বন্ধ হয় নাই, বরং অতীতের সকল রেকর্ড ভঙ্গ হয়েছে। সর্বশেষ ২০১৮ সালের জানুয়ারী থেকে ২১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর সরকার দলীয় নেতা কর্মী সহ অন্যান্য সংগঠনের নেতা কর্মী সমর্থকদের দ্বারা হামলা লুঠপাট সহ ১৮১৯ টি ঘটনা ঘটেছে। অনেক ঘটনার সাথে প্রশাসনের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদদের অভিযোগও রয়েছে। এসব ঘটনায় ব্যক্তি, পরিবার, প্রতিষ্ঠান ও মন্দির ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে যার সংখ্যা কমপক্ষে ৫০,০০০(পঞ্চাশ হাজারটি) এবং ২৭৩৪.৮১ একর ভূমি জবর দখল হয়েছে। এর মধ্যে হত্যার শিকার হয়েছে ৯৬ জন, হত্যার হুমকী ২৮৭ জনের উপর, হত্যা চেষ্টা ৭৯ জনের উপর, জখম ও আহত করা হয়েছে ৩৫১ জনকে, নিখোজ হয়েছে ৪৮ জন, চাঁদাবাজি, মারধর,আটক রেখে নির্যাতন হয়েছে ১১৭ ঘটনা, চাঁদাবাজী হয়েছে ৪০ লাখ টাকা, পরিবার ও মন্দির লুঠ এর ৯৭ টি ঘটনা ঘটেছে। বসতবাড়ী ও সম্পত্তির উপর হামলার ঘটনা ঘটেছে ৪৯ টি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ৩৫টি হামলার ঘটনা ঘটেছে, ২৭৩৪.৮১ একর সম্পত্তি দখল হয়েছে। এ ছাড়াও প্রায় ৯ কোটি টাকার ভূমি বে-দখল হয়। বসত বাড়ী থেকে উচ্ছেদ ২১৭ টি পরিবার, উচ্ছেদের চেষ্টা ৯০৬৩ টি পরিবার, উচ্ছেদের হুমকী ২৯০ পরিবার, দেশ ত্যাগের হুমকীর শীকার ৩১৩ পরিবার, নিরাপত্তাহীনতায় ২৪১০ পরিবার, মন্দিরে হামলা ভাংচুর অগ্নি সংযোগের ঘটনা ঘটেছে ১৭৬ টি, বাড়ীতে হামলা ভাংচুর অগ্নি সংযোগের ঘটনা ঘটেছে ১১৯ টি, প্রতিমা ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে ৩৯৭ টি, প্রতিমা চুরি হয়েছে ১১ টি, ২৯ জনকে অপহরণ করা হয়েছে, ২৯ কে ধর্ষন করা হয়েছে, ২১ জনকে ধর্ষনের চেষ্টা হয়েছে, ৯ জনকে গণ ধর্ষন করা হয়েছে। ৫ জনকে ধর্ষনের পর হত্যা, ২৭ জনকে জোর পূর্বক ধর্মান্তরিত ও ধর্মান্তর করনের চেষ্টা হয়েছে। ৭ টি ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত এর ঘটনা ঘটেছে। মিথ্যা মামলায় আসামী, গ্রেফতার বরখাস্ত করা হয়েছে ১৮ জনকে, ১১০ টি পরিবারকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান অপবিত্রকরণ ৩ টি, পরিকল্পিতভাবে ধর্মীয় নিষিদ্ধ গোমাংস খাইয়ে এর ৫ টি ঘটনায় ৭৩৯ জনকে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করা হয়েছে।
কিন্তু জাতীয় সংসদ সব সময়ই নিরব ভূমিকা পালন করেছে। সেকারনে সংখ্যালঘু নির্যাতন ও নিপিড়ন বন্ধে এবং সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব সুনিশ্চিত করতে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায় নি¤েœাক্ত দাবী দাওয়া উত্থাপন করেছে।- ১। জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত আসন ও পৃথক নির্বাচন ব্যবস্থা পূণঃ প্রতিষ্ঠা ২। একটি সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা ৩। স্বাধীন সংখ্যালঘু কমিশন প্রতিষ্ঠা। উক্ত দাবী দাওয়া বাস্তবায়নের দাবীতে হিন্দু সম্প্রদায় সারা দেশে ব্যপকভাবে আন্দোলন সংগ্রাম করেছে। হিন্দু মহাজোট সরাসরি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, জাতীয় পার্টি, জাতীয় ঐক্য ফ্রন্ট ও বিএনপি নেতৃবৃন্দের কাছে উপরোক্ত দাবীদাওয়া উত্থাপন করেছে। কিন্তু বেদনার বিষয় আওয়ামীলীগ ১০০% হিন্দু সম্প্রদায়ের ভোট আশা করলেও নির্বাচনী ইস্তেহারে প্রধান দাবী দুটির প্রতি কর্ণপাত করে নাই, প্রতিশ্রুতি দেয় নাই। অর্থাৎ আওয়ামীলীগ সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের দাবী দাওয়া পূরনে আন্তরিক নয়; তারা হিন্দু সম্প্রদায়কে শুধু ক্ষমতায় বসার সিঁড়ি হিসেবে ব্যবহার করতে চায়। অপরদিকে বিএনপি বা জাতীয় ঐক্য ফ্রন্টও হিন্দুদের প্রতিনিধিত্ব প্রতিষ্ঠায় আন্তরিকতা দেখায়নি। তারা তাদের নির্বাচনী ইস্তেহারে হিন্দু সম্প্রদায়ের ২য় দাবী “সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রণালয়” প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি দিলেও প্রতিনিধিত্ব প্রতিষ্ঠায় আন্তরিকতা দেখায়নি। অর্থাৎ আগামীতে যে দলই ক্ষমতায় আসুক সংখ্যালঘু সম্প্রদায় তাদের প্রতিনিধিত্ব থেকে বঞ্চিত হবে। এমতাবস্থায় সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায় আপনাদের মাধ্যমে সকল রাজনৈতিক দলের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে-১। নির্বাচন চলাকালে ও নির্বাচন পরবর্তী সময়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর সহিংসতা ও নির্যাতন নিরোধ কল্পে এবং হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে জাতীয় সংসদে ৫০টি সংরক্ষিত আসন ও পৃথক নির্বাচন ব্যবস্থা পূণঃ প্রতিষ্ঠা; ২। সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা; ৩। ১৯৭২ সাল থেকে বর্তমান পর্যন্ত সকল সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনার তদন্ত পূর্বক বিচার করার জন্য একটি স্বাধীন সংখ্যালঘু কমিশন এর দাবী জানাচ্ছে। হিন্দু সম্প্রদায় আশা করে রাজনৈতিক দলগুলো হিন্দু সম্প্রদায়ের উপরোক্ত দাবী গুলোর প্রতি সম্মান দেখিয়ে তাদের নির্বাচনী ইস্তেহার সংশোধন করে সন্নিবেশিত করবে।
Copyright © 2023 Amaderkatha | Design & Developed By: Design Ghor