আনোয়ারা (চট্টগ্রাম) সংবাদদাতা :-
আনোয়ারার পরৈকোড়া ইউনিয়নটি ছিল একসময় উপজেলার সবদিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ এলাকা। এই ইউনিয়নে তৎকালে ছিল ৯ জন বড় বড় জমিদার।
তাদের মধ্যে যোগেস_চন্দ্র_রায়_বাহাদুর ও প্রসন্ন_কুমার_ছিলেন অন্যতম। পুরো চট্টগ্রামে ছিল তাদের জমিদারির বিস্তৃতি। একসময় যখন দেশের কোথাও বিদ্যুৎ ছিলনা তখন এই পরৈকোড়াতেই জমিদার প্রসন্ন কুমারের বাড়িতে জেনারেটরের সাহায্যে জলত বৈদ্যুতিক বাতি।
প্রজাবৎসল হিসেবে এসব জমিদারের ছিল সুখ্যাতি। প্রজাদের সুবিধার্তে এ ইউনিয়নে খনন করেছিলেন তারা অসংখ্য দিঘী, নির্মাণ করেছিলেন হাট-বাজার, ব্রীজ- কালভার্ট ,রাস্তা-ঘাট, বিদ্যালয়সহ অনেক কিছু। আজ সেইসব স্থাপনা আর কীর্তি রক্ষণাবেক্ষনের অভাবে পুরোপুরি হারিয়ে যেতে বসেছে।
জানা যায়, বৈদ্য বংশের প্রখ্যাত জমিদার যোগেশ চন্দ্র রায়ের পূর্ব পুরুষ ছিলেন দেওয়ান_বৈদ্য_নাথ। ১৬শ শতকে এদের জমিদারীর গোড়াপত্তন। তার দুইটি জমিদারি, বহু হাট-বাজার, দিঘী আজো কীর্তি হয়ে আছে। চট্টগ্রামের দেওয়ান বাজার, দেওয়ানজী পুকুর পাড়, দেওয়ান হাট আজো তার নামের সাক্ষী বহন করে। তার পুত্র জমিদার হরচন্দ্র রায়ের দত্তক পুত্র ছিলেন, গিরিশ চন্দ্র রায়।
মাত্র ২৭ বছর বয়সে তিনি মারা গেলে তার স্ত্রী নয়নতারা রাউজান উপজেলার কৈলাশচন্দ্র চৌধুরীর ৮ বছরের পুত্র যোড়সাকে দত্তক নিয়ে তার নাম রাখেন যোগেষ চন্দ্র রায়। ১৮৯০ সালের ১৪ জুলাই নয়নতারা মৃত্যুবরণ করলে জমিদারির দায়িত্ব গ্রহণ করেন তিনি। তিনি ছিলেন শিক্ষানুরাগী, প্রজা বৎসল এক জমিদার। সাধারন মানুষের কথা বিবেচনা করে পরৈকোড়া ইউনিয়নে তিনি যাতায়াতের সুবিধার্তে মুরালি খালের উপর নির্মাণ করেন একটি প্রশস্ত ব্রীজ।
প্রতিষ্ঠা করেন লালানগর বাজার। মানুষের চিঠিপত্র আদান প্রদানের জন্য নির্মাণ করেন পোষ্ট অফিস তাছাড়া এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে বহু পাকা সড়ক ও নির্মাণ করেন একটি হাসপাতাল।
সূত্রে জানা যায়, ব্রিটিশ সরকারের সময় স্থাপিত বর্তমান আনোয়ারা থানাও তৎকালীন সরকার এই পরৈকোড়াতেই স্থাপন করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু জমিদার যোগেশ চন্দ্র ‘থানার ধারে কানাও ঘেঁষেনা’ এই কথা বলে তা ফিরিয়ে দেন।
[gs-fb-comments]Copyright © 2023 Amaderkatha | Design & Developed By: Design Ghor