উপজেলা নির্বাচনকে সামনে রেখে নবীনগর আওয়ামীলীগে বিভক্তি

২৬ মার্চ, ২০১৯ : ১০:১৬ পূর্বাহ্ণ ৪১০

 

নবীনগর।।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া নবীনগর উপজেলা আওয়ামীলীগের অভ্যন্তরিন দ্বন্দ্ব আবারো প্রকাশ্যে রূপ নিয়েছে। উপজেলা নির্বাচনকে সামনে রেখে দলটি দু’ধারায় বিভক্ত হয়ে গেছে। উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ফয়জুর রহমান বাদল দলের প্রার্থী কাজী জহির উদ্দিন সিদ্দিক টিটরু এবং আওয়ামীলীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য জাতীয় সংসদ সদস্য এবাদুল করিম বুলবুল আওয়ামীলীগ কর্মী বিদ্রেুাহী প্রার্থী (সতন্ত্র) মনিরুজ্জামান মনির এর পক্ষে সমর্থন দেওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছেন নেতাকর্মীরা। দুই নেতার দু’ধারায় অবস্থানের ফলে বিব্রতকর অবস্থার মধ্যে পরেছে দলের নেতা/কর্মীরা। উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থী বাছাইকে কেন্দ্র করে উপজেলা আওয়ামীলীগের আভ্যন্তরিন দ্বন্দ্ব শুরু হয়। গত ২৮ জানুয়ারী প্রার্থী বাছাই নিয়ে উপজেলা আওয়ামীলীগের এক বর্ধিত সভায় মনোনয়ন প্রত্যাশিত ১৯ প্রার্থী মধ্যে দলের মনোনিত প্রার্থী বাছাইয়ের জন্য স্থানীয় সাংসদকে তৃণমূল আওয়ামীলীগ থেকে একক ক্ষমতা দেয় হয়। সেই সিদ্ধান্তের আলোকে দলীয় নীতি নির্ধারণী ব্যক্তিদের মতামতে ভিত্তিতে একজনকে দলের সহ-সভাপতি হাবিবুর রহমান হাবিবের নাম কেন্দ্রে পাঠায় সাংসদ। তৃণমূলের এ সিদ্ধান্তকে বিরোধীতা করে দলের তিন মনোনয়ন প্রত্যাশি জহির উদ্দিন সিদ্দিক টিটু, সিরাজুল ইসলাম ফেরদৌস, মো. আল-আমিন দলের মনোনীত ব্যক্তি যুদ্ধাপরাধী গোলাম আজমের আত্বীয় অভিযোগ তুলে সংবাদ সম্মেলন করেন। অভিযোগটি মিথ্যা ভিত্তিহীন দাবী করে দলের মনোনীত হাবিবুর রহমান হাবিব পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করেন। এরই মাঝে গত ১ মার্চ কেন্দ্রীয় ভাবে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন নিয়ে আসেন জহির উদ্দিন সিদ্দিক টিটু। অপরদিকে বিদ্রেুাহী প্রার্থী (সতন্ত্র) হিসাবে মনোনযন দাখিল করেন মনিরুজ্জামান মনির ও মো. নাছির উদ্দিন নাসির। এ দ্বন্দ্ব মিঠাতে গত ৫ মার্চ দলের আরেকটি বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেই বর্ধিত সভায় বিক্ষুদ্ব নেতা/কর্মীরা দলের মনোনীত প্রার্র্থীর বিরুদ্ধে মানহানীকর মিথ্যা তথ্য প্রকাশ করায় দলসহ ব্যক্তির ইমেজ ক্ষুন্ন হয়েছে উল্লেখ করে এর বিচার দাবী করেন। সভায় এ বিরোধ মিমাংসা করতে সভাপতির নেতৃত্বে একটি সাব কমিটি গঠন করা হয়। কিন্তু সভাপতি ওই বিরোধ নিষ্পত্তি না করেই গত ২২ মার্চ ঢাকায় একটি পরামর্শ সভা করে সাবেক সাংসদ দলের সভাপতি জহির উদ্দিন সিদ্দিক টিটুর(নৌকা)পক্ষে অবস্থান নেওয়ার ঘোষনা দেন। এদিকে ২৪ মার্চ সাংসদ ঢাকায় তৃণমূল নেতা/কর্মী ও চেয়ারম্যানদের নিয়ে একটি পরামর্শ সভা করে মনিরুজ্জামান মনিরকে(দোয়াতকলম) সমর্থনের কথা জানান এবং ওই সভায় দলের আরেক সতন্ত্র প্রার্থী মো. নাছির উদ্দিন নাছির(আনারস) নির্বাচন থেকে সরে গিয়ে মনিরুজ্জামানকে সমর্থন করেন।
এ ব্যাপারে আওয়ামীলীগ দলীয় প্রার্থী কাজী জহির উদ্দিন সিদ্দিক টিটু বলেন, আমি আওয়ামীলীগ পরিবারের সন্তান,ছোট বেলা থেকেই রাজনীতির সাথে জড়িত থেকে দলের দুঃসময়ে ও সু-সময়ে নিবেদিত ভাবে কাজ করেছি,জননেত্রী সেই মূল্যায়ন করে আমাকে মনোনয়ন দিয়েছেন। কিছু ভুল বুঝা বুঝি ছিল সেটি সমাধান হয়েছে,আমাদের মাঝে কোন বিভক্তি নেই,আমি বিশ্বাস করি এমপি মহোদয় নেত্রী সিদ্বান্তকে প্রাধ্যন্য দিয়ে নৌকার পক্ষে কথা বলবেন।
এ ব্যাপারে আওয়ামীলীগের বিদ্রেুাহী প্রার্থী (সতন্ত্র) মনিরুজ্জামান বলেন, আমি ছাত্র জীবন তৃনমূল থেকেই রাজনীতি করে কেন্দ্রীয় পর্যায়ে উঠে এসেছি, এলাকার জনগন আমাকে চেয়েছে বলেই আমি নির্বাচনে এসেছি, যোগ্যতার ভিত্তিতে জনসমর্থন নিয়ে নির্বাচিত হয়ে এলাকার মানুষের সেবা করতে চাই ।
এ ব্যাপারে দলের সভাপতি সাবেক সাংসদ ফয়জুর রহমান বাদল বলেন, দলের কোন বিবোধ নেই,জননেত্রী মনোনিত প্রার্থী পক্ষেই আমরা কথা বলছি,যারা দলকে ভালবাসে,দলের আর্দশ মেনে চলে তারা নৌকা প্রতিকের বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই ।
এ ব্যাপারে দলের স্থানীয় সাংসদ এবাদুল করিম বুলবুল বলেন, সভাপতিকে বার বার বলেছি দলের বিরোধ মেটাতে তিনি তা করেননি।দলে কোন বিভক্তি নেই, যারা নির্বাচন করছেন সবাই আওয়ামীলীগের। নির্বাচনী প্রচারনায় এমপিরা অ্রংশগ্রহন করতে পারেন না। জননেত্রী বলেছেন, উনম্মুক্ত নির্বাচনে যোগ্যতার ভিত্তিতে যেই নির্বাচন পাস করে আসবেন তাকেই স্বাগত জানাবেন। আমিও চাই অংশগ্রহন মূলক নির্বাচনে যোগ্যতার ভিত্তিতে নেতৃত্ব বেরিয়ে আসুক, আমি আশাবাদী নবীনগরের উন্ন্য়নের জন্য সাধারণ মানুষ তাদের পছন্দের যোগ্যতম প্রাথীকেই বেঁছে নিবে। নির্বাচন হবে অবাধ,সুষ্ঠু,নিরপেক্ষ কোন প্রকার স্বজনপ্রীতি কারচুপি,ভোট ডাকাতির সুযোগ নেই-আমার ভোট আমি দেব,যাকে খুঁশি তাকে দিব। জনসাধারণ যাতে সাচ্ছন্দে তাদের ভোটধিকার প্রয়োগ করতে পারে সেই জন্য প্রশাসন সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহন করেছে।

[gs-fb-comments]
Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com