
নবীনগর।।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে গ্রাম্য আধিপত্য বিস্তারের জের ধরে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়নে থানাকান্দি গ্রামে বিবাদমান দুই গ্রুপের মধ্যে ফের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে ১০ জন আহত হয়েছে এবং চেয়ারম্যান জিল্লুর রহমান বাড়িতে হামলা করে তাকে অবরুদ্ধ করে তাঁর বাড়িঘর ভাংচুর,করে প্রায় দেড় শতাধিক বাড়িঘরে ভাংচুর,লুটতরাজসহ এলাকার একজন সুনামধন্য ম্যাজিষ্ট্রেট কবির আহমদের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়। নির্বাচনোত্তর এ সংঘর্ষে কাউছার মোল্লাসহ জড়িত উভয় পক্ষের ২০জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার(০২/০৪) পুলিশ বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামী দিয়ে মামলা করে গ্রেফতারকৃতদের জেল হাজতে প্রেরণ করেছে। ওই গ্রামে প্রায় তিন যুগের বেশী সময় ধরে দুই প্রভাবশালী আবু মেম্বার ও মোসলেম মেম্বারের মধ্য আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। এলাকার যে কোন ইস্যুতে ওই দুই গ্রুপ দুই পক্ষে অবস্থান নিয়ে নেতৃত্ব দেয়। সামান্য ও ছোটখাট বিষয় নিয়ে দাংগা হাঙ্গামা সৃষ্টি করে রক্ষক্ষয়ী সংঘর্ষে মেতে উঠে তারা। বিভিন্ন সময় নানা ইস্যুতে সংঘঠিত সংঘর্ষে ৪ খুন ও ২৫টি পাল্টাপাল্টি মামলা হয়েছে। সদ্যসমাপ্ত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নতুন মাত্রা যোগ হয়। কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের ৪টি গ্রাম গৌরনগর, হাজীর হাটি, সাতঘর হাটি ও থানাকান্দি এই চারটি গ্রামে গত ৩৫ বছর যাবত এ খুন খারাপী চলে আসছে। ওই দুই গ্রুপই এ চারটি গ্রামকে নিয়ন্ত্রন করে।
৩১ মার্চ সদ্য সমাপ্ত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনেও ওই দুই গ্রুপ প্রতিদ্বন্ধী দুই প্রার্থীর পক্ষে অবস্থান নেয়। বর্তমান ওই দুই গ্রুপের আবু মেম্বার গ্রুপের নেতৃত্ব দিচ্ছেন চেয়ারম্যান জিল্লুর রহমান তিনি আওয়ামীলীগের বিদ্রেুাহী প্রার্থী মো. মনিরুজ্জামান মনির (দোয়াত কলম) পক্ষে অপরদিকে মোসলেম মেম্বার গ্রুপের নেতৃত্ব দিচ্ছেন কাউছার মোল্লা তিনি আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী কাজী জহির উদ্দি সিদ্দিক টিটু(নৌকা) পক্ষে অবস্থান নেয়। নির্বাচনের দিন দোয়াত কলম সমর্থনের ভোটারা ভোট দিতে উত্তর লক্ষীপুর সর:প্রা: বিদ্যালয় কেন্দ্রে যাওয়ার পথে নৌকার সমর্থক গ্রুপ কাউছার মেম্বার ও কাউছার মাষ্টারের নেতৃত্বে একটি দল তাদের কেন্দ্রে যেতে বাধাঁ দেয় এবং অটো ড্রাইভারকে মারধর করে। তারই রেশ ধরে নৌকার সমর্থক গোষ্টি দোয়ত কলম সমর্থকদের বাড়িঘরে হামলা চালালে দুপক্ষের মধ্যে এ সংঘর্ষ হয়।
এ ব্যাপারে নবীনগর থানার অফিসার ইনচার্জ রনোজিত রায় বলেন,ওই অঞ্চলে দাংগা হাঙ্গামা দীর্ঘদিনের যে কোন ইস্যুতে তারা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। চেয়ারম্যানকে মারার উদ্যেশে তার বাড়িতে হামলা, খবর পেয়ে পুলিশ তাৎক্ষনিক পৌছে অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে চেয়ারম্যানকে উদ্ধার করে। ওই এলাকায় পর্যাপ্ত পরিমান পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। গ্রেফতার অভিযান অব্যাহত রয়েছে। গ্রামটি পুলিশের নিয়ন্ত্রনে রয়েছে।