পাকিস্তানকে উপেক্ষা করে বাংলাদেশ সহ সার্কভুক্ত দেশগুলোকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন নরেন্দ্র মোদি

২ জানুয়ারি, ২০২০ : ৯:৩০ পূর্বাহ্ণ ৪০৭

ঢাকা।।

পাকিস্তানকে উপেক্ষা করে বাংলাদেশ সহ সার্কভুক্ত অন্য দেশগুলোর শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে ইংরেজি নতুন বছরের শুভেচ্ছ বিনিময় করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এ সময় তিনি ওইসব দেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ককে উন্নত করার ওপর জোর দিয়েছেন। বুধবার তিনি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফোনে বলেছেন, তার সরকারের অগ্রাধিকারে রয়েছে ভারত-বাংলাদেশের সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ করা। তিনি আশা প্রকাশ করেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ এই সম্পর্ককে আরো উন্নত করবে। ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশের সাবেক হাই কমিশনার সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলির মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন মোদি। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সাম্প্রতিক সময়ে নাগরিকত্ব সংশোধন আইন (সিএএ) ও নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি) নিয়ে সম্পর্কে টানাপড়েন সৃষ্টি হয়েছে। এর প্রেক্ষিতে মোদির এই অবস্থানকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। সব অনুপ্রবেশকারীকে দেশ থেকে বের করে দেয়া সম্পর্কে এরই মধ্যে বিজেপির কিছু নেতা যে মন্তব্য করেছেন, তাতে ঢাকার নেতৃত্ব ক্ষুব্ধ হয়েছেন।
এ খবর দিয়েছে অনলাইন হিন্দুস্তান টাইমস, ডেকান ক্রনিকল, ডিএনএ সহ ভারতীয় অনেক মিডিয়া।
এতে বলা হয়, প্রতিবেশী দেশগুলোর সাতটি দেশের নেতাদের সঙ্গে নতুন বছরের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন নরেন্দ্র মোদি। তার মধ্যে শেখ হাসিনা অন্যতম। আগামী তিন বছরের জন্য আওয়ামী লীগের প্রেসিডেন্ট পুনঃনির্বাচিত হওয়ার জন্য শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন মোদি। সরকারি এক বিবৃতি অনুযায়ী, ভারত ও বাংলাদেশ ২০১৯ সালে যে অগ্রগতি অর্জন করেছে তা তুলে ধরেন মোদি। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আসন্ন জন্মশতবর্ষ, বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর এবং কূটনৈতিক সম্পর্ক গুরুত্বপূর্ণ এক মাইলস্টোন স্থাপন করেছে ভারত ও বাংলাদেশের সম্পর্ককে আরো সমৃদ্ধ করার ক্ষেত্রে। এটা মোদি সরকারের অগ্রাধিকারে রয়েছে। এ সময় ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশের সাবেক হাই কমিশনার সৈয়দ মুয়াজ্জেম আলির মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।সব টেলিফোন আলাপে মোদি ভারতের জনগণের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা পৌঁছে দেন। দেশের সব বন্ধু ও আঞ্চলিক অংশীদারদের প্রতি ‘নেইবারহুড ফার্স্ট’ পলিসি, অভিন্ন শান্তি, নিরাপত্তা, সমৃদ্ধি ও অগ্রগতির প্রতি নয়া দিল্লির প্রতিশ্রুতির কথা জোরালোভাবে ফুটিয়ে তোলেন তিনি। ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগায়েল ওয়াংচুকের সঙ্গে আলাপকালে মোদি গত বছরের অর্জনগুলোর কথা জোর দিয়ে তুলে ধরেন। বলা হয়েছে, এই অর্জনের মধ্য দিয়ে দুই দেশের বিশেষ সম্পর্ক সুদৃঢ় হয়েছে। এ সময় তিনি যুব সম্প্রদায় বিনিময়ের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। উল্লেখ করেন, ভুটানের রাজার আসন্ন ভারত সফরের জন্য তিনি অপেক্ষা করছেন। এ ছাড়া ভুটানের প্রধানমন্ত্রী লোটে শেরিংয়ের সঙ্গেও কথা বলেন মোদি।
নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলিও’র সঙ্গে আলোপকালে মোদি বিভিন্ন প্রকল্প সম্পন্ন হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেন। এসব প্রকল্পের মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য মোতিহারি-আমলেখগঞ্জ পেট্রোলিয়াম জাতীয় জ্বালানির পাইপলাইন। বিরাটনগর চেকপয়েন্টে একটি সমন্বিত চেকপয়েন্ট আগেভাগেই উদ্বোধন করতে একমত হন তারা। এ ছাড়া ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে নেপালে একটি গৃহায়ণ বিষয়ক প্রকল্পের উদ্বোধনের বিষয়েও তারা একমত হন।
নরেন্দ্র মোদি ফোন করেছেন শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোটাবাইয়া রাজাপাকসেকে। এ সময় তিনি আস্থা প্রকাশ করেন, ২০২০ সালে দুই দেশ তাদের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক উন্নত করবে। এ ছাড়া দেশটির প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দ রাজাপাকসের সঙ্গে কথা বলেন। মাহিন্দ রাজাপাকসে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে উন্নত করতে উদগ্রীব বলে জানিয়েছেন। ফোনালাপে ভারত ও মালদ্বীপের সঙ্গে সম্পর্ক আরো গাঢ়, শক্তিশালী করার ওপর জোর দিয়েছেন মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম মোহাম্মদ সোলিহ। সম্পর্ক এমন পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া হবে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা ও একত্রে কাজ করার নতুন নতুন ক্ষেত্র উদ্ভাবনের মাধ্যমে।এখানে বলে রাখা ভাল যে, নরেন্দ্র মোদি প্রায় এক সপ্তাহ আগে কথা বলেছেন আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট আশরাফ গণির সঙ্গে। কিন্তু এক্ষেত্রে উপেক্ষা করেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে। এর কারণ, সাম্প্রতিক সময়ে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সৃষ্ট উত্তেজনাকর অবস্থা।

[gs-fb-comments]
Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com