চট্টগ্রাম।।
ত্রাণ বিতরণে অনিয়ম সহ্য করা হবে না জানিয়ে বিভাগীয় কমিশনার এবিএম আজাদ বলেছেন, ত্রাণের নামে কিছু কিছু সংগঠনের ফটোসেশন বন্ধ করতে হবে। যারা পেটের তাগিদে ঘর থেকে বের হয়ে সড়কে নামছে, তাদেরকে ত্রাণ সহায়তার আওতায় আনতে হবে। বৃহস্পতিবার (২ এপ্রিল) সকালে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে অনুষ্ঠিত করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ ও মোকাবিলা সংক্রান্ত বিভাগীয় কমিটির সভায় তিনি এসব কথা বলেন।বিভাগীয় কমিশনার বলেন, দিনমজুর, বেদে সম্প্রদায়, তৃতীয় লিঙ্গসহ হতদরিদ্র মানুষকে সরকারি-বেসরকারিভাবে ত্রাণ সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। এসব ত্রাণ সুষ্ঠুভাবে বন্টনের আগে যাচাই-বাছাইয়ের জন্য সিটি করপোরেশন ও জেলা প্রশাসককে অবহিত করতে হবে। কমপক্ষে তিন ফুট দুরত্ব বজায় রেখে ত্রাণ দিতে হবে। এবিএম আজাদ বলেন, রিকশা থেকে শুরু করে কোনো যানবাহন রাস্তায় নামতে পারবে না। বিশেষ প্রয়োজনে কেউ ঘর থেকে বের হলে দুপুরের পরপর তাকে ঘরে চলে যেতে হবে। কেউ এ আদেশ অমান্য করে রাস্তায় ঘোরাফেরা করলে জরিমানাসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি বলেন, করোনা ভাইরাসের চরম ঝুঁকিতে বাংলাদেশ। করোনার কারণে সরকার সারাদেশে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে। এ ভাইরাস থেকে রক্ষা পেতে হলে আপাতত রাস্তায় বের হওয়া যাবে না, ঘরেই থাকতে হবে। পাশেরজনকেও ঘর থেকে বের না হতে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। সবার মধ্যে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। বিভাগীয় কমিশনার বলেন, চট্টগ্রামে করোনা শনাক্তের জন্য ১ হাজার কিট ও সরঞ্জামা প্রস্তুত রয়েছে। জ্বর, শ্বাসকষ্ট, সর্দি, কাশি ও হাঁচি নিয়ে হাসপাতালে গেলে আতংকিত না হয়ে রোগীর শরীরে করোনার লক্ষণ আছে কী না- তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য ফৌজদারহাট বিআইটিআইডি রোগীর নমুনা সংগ্রহ করবে। রোগীর শরীরে করোনা ভাইরাস পজেটিভ হলে বিআইটিআইডি, জেনারেল হাসপাতাল, বেসরকারি পার্কভিউ হাসপাতাল, ইম্পেরিয়েল হাসপাতাল ও মেডিক্যাল সেন্টারের আইসোলেশন বেড এবং ভেন্টিলেটরসহ প্রস্তুত রাখা আইসিইউ-এ চিকিৎসা দেওয়া হবে।’ যোগ করেন তিনি। এবিএম আজাদ বলেন, আইসোলেশনে থাকা কোনো রোগীর মৃত্যু হলে ঐ রোগীর মৃত্যু করোনায় কী না- তা টেস্টের মাধ্যমে শতভাগ নিশ্চিত না হয়ে পরিবারের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা যাবে না। করোনায় মারা যাওয়া রোগীদেরকে সরকারিভাবে দাফন ও দাহ করার জন্য ৫ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি রয়েছে।‘এছাড়াও করোনা রোগী সংক্রান্ত বিভাগীয় পর্যায়ের যে কোনো তথ্য দিতে চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ে একটি মিডিয়া সেল থাকবে। প্রতিদিন সন্ধ্যায় মিডিয়া সেল থেকে ফোকাল পারসন হিসেবে গণমাধ্যম কর্মীদেরকে তথ্য সরবরাহ করবেন একজন প্রতিনিধি।’সভায় বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডা. হাসান শাহরিয়ার কবির বলেন, করোনা মোকাবিলায় সচেতনতা বেশি জরুরি। আমরা বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়ে রেখেছি। প্রথম পর্যায়ে চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে শুধু করোনা রোগী রাখার ব্যবস্থা রয়েছে। ফৌজদারহাট বিআইটিআইডিতে করোনা শনাক্তকরণ কীট ও সরঞ্জামাদি রয়েছে। বিআইটিআইডির পরিচালক ডা. এম এ হাসান বলেন, চট্টগ্রামে করোনা রোগী শনাক্তের জন্য ১ হাজার কীট ও সরঞ্জাম পাওয়া গেছে। বিআইটিআইডির ল্যাব আর্ন্তজাতিক মানের। এখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু হয়েছে। এখন পর্যন্ত কারও শরীরে করোনা শনাক্ত হয়নি। চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল এসএম হুমায়ুন কবির বলেন, প্রত্যেকের নিরাপত্তা প্রয়োজন। করোনা রোগী শনাক্ত ও চিকিৎসার জন্য সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন। সভায় আরও বক্তব্য দেন অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) শংকর রঞ্জন সাহা, পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি খন্দকার গোলাম ফারুক, সিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (প্রশাসন ও অর্থ) আমেনা বেগম, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইলিয়াস হোসেন, সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী মো. সামসুদ্দোহা, পুলিশ সুপার এস এম রশিদুল হক প্রমুখ।
Copyright © 2023 Amaderkatha | Design & Developed By: Design Ghor