আমরা সময়ের কথা সময়ে বলি।

Advertisement

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পানিতে ডুবে ২৪ দিনে ১১ শিশুর মৃত্যু

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, সারাদেশ 23 August 2020 ৭০৮

ব্রাক্ষনবাড়িয়া।।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বর্ষাকাল এলেই পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যুর সংখ্যা বাড়তে থাকে। কৃষি, মাছ চাষ, গোসলের জন্য বসতবাড়ির কাছাকাছি ছোট-বড় জলাধার, পুকুর, বিল, নদী থাকে। শিশুরা একটু চোখের আড়াল হলেই সেখানে গিয়ে দুর্ঘটনায় পড়ে। সিআইপিআরবির মতে, চার কারণে পানিতে ডুবে শিশু ও কিশোরদের মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। স্বজন বা বাবা-মায়ের অসতর্কতা, বিষয়টি নিয়ে উদাসীনতা, বাড়ি সংলগ্ন এলাকায় ডোবা, বিল, পুকুর বা নদী থাকা এবং সর্বোপরি শিশু ও কিশোরদের সাঁতার না জানা।পানিতে ডুবে সবচেয়ে বেশি মারা যায় এক থেকে চার বছর বয়সের শিশুরা। ঝুঁকিপূর্ণ সময়ে একটি নির্দিষ্ট স্থানে শিশুদের রাখলে ৮০ শতাংশ এবং সাঁতার শেখালে ৯৫ শতাংশ মৃত্যু কমানো সম্ভব।ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের নথি ঘেঁটে ও সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, ১৮ আগস্ট জেলার দক্ষিণ পৈরতলায় মুহাম্মদ শাহীন মিয়ার ছেলে মো. আবদুল্লাহ (৯) পুকুরের পানিতে পড়ে মারা যায়। ১৫ আগস্ট বিজয়নগরের মণিপুর গ্রামের হজরত আলীর ছেলে ফরহাদ মিয়া (৩) বাড়ির পাশের বিলের পানিতে পড়ে মারা যায়। ১৪ আগস্ট জেলা শহরের শান্তিবাগ এলাকার মোজাম্মেল হোসেনের মেয়ে আসমা বেগম (৮) আশুগঞ্জের তারুয়ার খোলাপাড়া গ্রামে বেড়াতে গিয়ে ডোবায় পড়ে মারা যায়। একইদিন সদর উপজেলার চিনাইর পূর্বপাড়া গ্রামের সোহাগ মিয়ার চার বছরের শিশু মেয়ে নোহা আক্তার বাড়ির পাশের পুকুরের পানিতে ডুবে মারা যায়।
১২ আগস্ট সদর উপজেলা উত্তর সুহিলপুরে খেলতে খেলতে রুবেল হোসেনের চার বছরের মেয়ে হাফসা বেগম বাড়ির পাশের পুকুরে পড়ে মারা যায়। ১১ আগস্ট একইভাবে মারা যায় সদর উপজেলার নরসিংসার গ্রামের রুবেল মিয়ার দুই বছরের মেয়ে রোজা আক্তার।এর আগে ৮ আগস্ট সদর ও নবীনগর উপজেলায় পানিতে ডুবে তিনজনের মৃত্যু হয়। ৫ আগস্ট আশুগঞ্জের লালপুর টংগীপাড়া গ্রামের ইয়াসিন মিয়ার পাঁচ বছরের বাক্‌ ও শারীরিক প্রতিবন্ধী ছেলে মো. আমিন বাড়ির উঠানে খেলার ফাঁকে বাড়ির পেছনের ডোবায় পড়ে মারা যায়। গত ২৬ জুলাই সদর উপজেলার উলচাপাড়া গ্রামে পানিতে ডুবে ফালু মিয়ার তিন বছরের মেয়ে রোজা আক্তারের মৃত্যু হয়। পানিতে ডুবে সবচেয়ে বেশি মারা যায় এক থেকে চার বছর বয়সের শিশুরা। সাঁতার জানা ও সাঁতার শেখা এই মৃত্যু প্রতিরোধের প্রধান উপায়। এ ছাড়া শিশুদের যদি দিনের ঝুঁকিপূর্ণ সময়ে পানি থেকে দূরে রাখা যায়, তাহলে বিপদ এড়ানো সম্ভব। ঝুঁকিপূর্ণ সময়ে একটি নির্দিষ্ট স্থানে শিশুদের রাখলে ৮০ শতাংশ এবং সাঁতার শেখালে ৯৫ শতাংশ মৃত্যু কমানো সম্ভব।ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক বলেন, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডারদের প্রশিক্ষণ দেওয়া আছে। তবে অভিভাবকদের সচেতন হতে হবে। বাড়ির পাশে পুকুর বা জলাশয় থাকলে সেখানে বেড়া দেওয়া উচিত। পানি থেকে উদ্ধারের পর শিশুর শ্বাসপ্রশ্বাসের জায়গাগুলো পরিষ্কার করে স্বতঃস্ফূর্ত রাখা উচিত। আর শিশুদের অবশ্যই সাঁতার শেখানো উচিত।