
ব্রাক্ষণবাড়িয়া।।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর শহরের প্রধান সড়ক হল টি,এ রোড। এ রোডের মাঝামাঝি রয়েছে একটি ব্রীজ। বুধবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর পরিষদের এক সভায় ওই ব্রীজটির নতুন নাম করন করেন ‘থানা ব্রীজ’। এর আগে মঙ্গলবার পৌরসভার পক্ষ থেকে ওই ব্রীজে সাইনবোর্ড টানিয়ে দেওয়া হয়। পৌর কর্তৃপক্ষ বলছে, আগে সেতুটি ‘ফকিরাপুল’ হিসেবে পরিচিত থাকায় শুনতে খারাপ লাগার কারনে নাম পরিবর্তন করা হয়েছে। ব্রীজে বসে যেন কেউ ভিক্ষাবৃত্তি না করতে পারে সে বিষয়েও ব্যবস্থা নেওয়া কথা শোনা গেছে। ওই ব্রীজে বসে ভিক্ষা করতেন এমন কয়েকজনকে সমাজ সেবা অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে ২৫ হাজার টাকা ও পৌরসভার পক্ষ থেকে ২০ কেজি করে চাল দেয়া হয়। ভিক্ষুকদের কর্মসংস্থানের লক্ষ্যেই এ উদ্যোগ নেওয়া হয়।
নতুন রাখা ওই নাম নিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে শুরু হয়েছে সমালোচনার ঝর। রাজনৈতিক কিংবা অন্য সব বিষয়কে ছাড়িয়প এখন ব্রীজ নিয়ে দু’দিন ধরে চলছে আলোচনা। অনেকে আগের প্রচলিত নাম ‘ফকিরাপুল’ কিংবা ‘ঘোড়াপট্টির পুল’ নামে নামকরণের দাবি জানান।‘সেতুটি যেখানে আছে এর কাছেই যাতায়তের ঘোড়া এসে দাঁড়াতো। ঘোড়া দাঁড়াতো বলে এলাকাটির নাম ঘোড়াপট্টি হিসেবে পরিচিতি পায়। পরে সেখানে ব্রীজ নির্মাণ হলে ঘোড়াপট্টির পুল হিসেবেই সবাই বলতো। পরবর্তীতে এ ব্রীজে ভিক্ষুকরা বসতো বলে ফকিরাপুল নাম হয়ে যায়। এই শহরের অনেকেই মনে করেন নাম পরিবর্তনের জন্য সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করার প্রয়োজন ছিল। ঘোড়াপট্টির পুল দিলে ঐতিহ্যের সঙ্গে মিল থাকতো।’
জেলা উদীচী শিল্পী গোষ্ঠী সভাপতি জহিরুল ইসলাম স্বপন বলেন, ‘এটা অনেক আগে থেকেই ফকিরাপুল হিসেবে লোকমুখে পরিচিত। তবে ফকিরদেরকে কেন্দ্র করে এ নাম হওয়ায় সেটা পরিবর্তন করার বিষয়টি মানতে পারি না। কারণ ফকিররাও তো মানুষ।’
এদিকে এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকেও সমালোচনা চলছে। জেলা নাগরিক ফোরামের সভাপতি পিযূষ কান্তি আচার্য্য তাঁর দেওয়া ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ‘ঘোড়াপট্টি ব্রিজেরই নামকরণের দাবি জানাচ্ছি, থানা ব্রিজ নয়। কারণ ঘোড়াপট্টির সাথে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ইতিহাস জড়িত।’ কবি মো. মনির হোসেন এক কমেন্টস এ লিখেছেন, ‘সেতুটির নামকরণ শহরের কোনো সমাদৃত-খ্যাতিমান মানুষের নামেও হতে পারে।’ নারী নেত্রী নন্দিতা গুহ লিখেছেন, ‘ঘোড়াপট্টির পুল নামটির সাথে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ঐতিহ্য জড়িত, হিরন্ময় ইতিহাস আছে। এটা পরিবর্তন করা ঠিক হবে না।’ বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল- বাসদ জেলা কমিটির আহব্বায়ক প্রবীর চৌধূরী রিপন বলেন এটি হঠাৎ করে পরিবর্তন কেন করতে হবে ইতিহাস ঐতিহ্য বিলুপ্ত করতে হবে কেন। এমব দায়িত্ব পৌরবাসী ত কাউকে দেয়নি।আগের নামেই ব্রীজের নাম করনের দাবী জানান।ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার সচিব মো. শামসুদ্দিন বলেন, ‘ফকিরাপুল নামটা শুনতে খারাপ দেখায় বলে বুধবার পৌর পরিষদের সভায় নাম পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে সবাই একমত পোষণ করেছেন।