আমরা সময়ের কথা সময়ে বলি।

Advertisement

নবীনগরে দানবীর মহেশ ভট্টাচার্যের বসতভিটা রক্ষার দাবিতে এলাকাবাসীর প্রতিবাদ সভা

নবীনগর, সারাদেশ 22 November 2020 ৪৪৪

নবীনগরে।।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার বিটঘর গ্রামে দেশখ্যাত দানবীর মহেশ ভট্টাচার্যের বসতভিটা রক্ষার দাবিতে ২২ নভেম্বর রোজ রবিবার সকালে দানবীর মহেশ ভট্টাচার্য বাড়ির সামনে প্রতিবাদ সভা করেন এলাকাবাসী।সেই সাথে সরকারের প্রতি দানবীর মহেশ ভট্টাচার্যের বসতভিটা রক্ষা করে অন্যত্র গুচ্ছগ্রাম বা আশ্রয়ণ প্রকল্প সরিয়ে নিতে জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন করেন এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা।প্রতিবাদ সভায় এলাকাবাসী অভিযোগ তোলেন মহেশ ভট্টাচার্যের রেখে যাওয়া মূল্যবান সম্পতিতে গৃহহীনদের জন্য ঘর তৈরি করছেন সরকার।পাশাপাশি সেখানে ভবিষ্যতে ‘গুচ্ছগ্রাম’ বানানো হবে বলেও তারা জানান।
এ অবস্থায় দানবীর মহেশ বাবুর রেখে যাওয়া বসতভিটিসহ যাবতীয় সম্পদ রক্ষার দাবিতে রবিবার জেলা প্রশাসক বরাবর পৃথক পৃথক ভাবে আবেদন প্রদান করেন বিটঘর ইউনিয়নে সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল কাইয়ুম,অধ্যক্ষ মোস্তফা কামাল।প্রতিবাদ সভায় অংশগ্রহণকারী ও জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদনকারী সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুল কাইয়ুম জানান,বিটঘর গ্রামের সন্তান দেশের প্রখ্যাত দানবীর মহেশ ভট্টাচার্য তাঁর জন্মভূমি বিটঘরে নিজের বসতভিটাসহ বিঘার পর বিঘা বহু জায়গা জমি ফেলে রেখে গেছেন।মহেশ ভট্টাচার্য ছিলেন দেশের একজন প্রখ্যাত দানবীর। তিনি জীবনভর মানুষের কল্যাণে জীবনের সর্বস্ব দান করে গেছেন। কুমিল্লা, নারায়ণগঞ্জসহ বহু এলাকায় তাঁর নামে একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ছাত্রাবাস,দাতব্য চিকিৎসালয়সহ অসংখ্য প্রতিষ্ঠান ও কীর্তি রয়েছে। নবীনগর থেকে জেলা সদরে যাতায়াতের প্রধান সড়কটির নামও এলাকাবাসী শ্রদ্ধাভরে তাঁর নামানুসারে ‘মহেশ সড়ক’ রেখেছেন।সম্প্রতি তাঁর জন্মভূমি বিটঘরে রেখে যাওয়া গ্রামের দীঘির পাড়ে প্রায় ৭৪ শতক খালি জায়গায় সরকারি উদ্যোগে ‘ভূমিহীদের জন্য গৃহনির্মাণ’ করা হচ্ছে যা অত্যন্ত দুঃখজনক।মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এই প্রকল্পের জন্য যেই উদ্যোগ নিয়েছে সেই জন্য আমরা কৃতজ্ঞ।তবে প্রকল্পের জন্য অনেক যায়গা থাকতে মহেশ বাবুর ভিটেমাটিতে কেন ?অন্য কোন যায়গায় করলে আমরা সহযোগিতা করতে প্রস্তুত আছি।
প্রতিবাদ সভায় বক্তব্যে বিটঘর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আহাম্মদ আলী খা বলেন, ‘বছরের পর বছর ধরে আমরা জানি,এই বিশাল জায়গা দানবীর মহেশ বাবুর বসতভিটি।
অথচ এই জায়গাটিকে ১ নম্বর খাস খতিয়ান বানিয়ে সেখানে নাকি এখন ‘গুচ্ছগ্রাম’ বানানো হচ্ছে।
তাই আমরা এর প্রতিকার চাই। তবে বিটঘরের বর্তমান চেয়ারম্যান আবুল হোসেন বলেন, ‘আমার জানা মতে, জায়গাটি সরকারি খাস জায়গা হওয়ায় এখানে সরকার গৃহহীনদের জন্য মুজিববর্ষে বিনামূল্যে ঘর তৈরি করে দিচ্ছেন।’এ বিষয়ে সহকারী কমিশনার (ভূমি) ইকবাল হাসান বলেন, ‘আমরা ভালো করে রেকর্ডপত্র যাচাই বাছাই করে নিশ্চিত হয়েছি এটি ১ নম্বর খাস খতিয়ানভুক্ত জায়গা।রেকর্ডে এটি ব্যক্তিগত কারো সম্পত্তি নয়।’গ্রামবাসীর দাবীর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি আরো বলেন,সরকারের সিদ্ধান্তের বাহিরে যাওয়ার কোন সুযোগ আমাদের নেই।নবীনগরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) একরামুল ছিদ্দিক বলেন, আমি বিষয়টি এখনো ভালো করে জানিনা, খোঁজ খবর নিয়ে এলাকাবাসীর মতামতের ভিত্তিতে সরকারের নির্দেশনা মেনে কাজ করতে ব্যবস্থা নেয়া হবে।এ বিষয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান মনির বলেন,মহেশ ভট্টাচার্য আমাদের অহংকার, আমি যতটুকু জানি ২০১৭/১৮ সালের দিকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মোতাবেক বাড়ি আছে ঘর নেই অথবা ঘরও নেই বাড়িও নেই এমন ব্যক্তিদের জন্য গুচ্ছ গ্রাম বা আশ্রয়ণ প্রকল্প করার জন্য ততকালিন স্থানীয় ও উপজেলা ভুমি অফিস এই যায়গাটিকে বেছে নেন।সিএস আরএস দুটোই মহেশ ভট্টাচার্যের নামে থাকার পরও কি করে যায়গাটি জেলা পরিষদের ১ নং খাস খতিয়ানভুক্ত হয়েছে তা খতিয়ে দেখা হবে।আমরা বিষয়টি নিয়ে উপজেলা পরিষদ,মাননীয় সংসদ সদস্য সহ সকলের নজরে এনে সুষ্ঠুভাবে বিষয়টি ফায়সালার উদ্যোগ নিব।