আমরা সময়ের কথা সময়ে বলি।

Advertisement

আশুগঞ্জে পিটুনি শিকার হতে হয়েছে পুলিশকে

আশুগঞ্জ, সারাদেশ 29 December 2020 ৩৮১

ব্রাক্ষণবাড়িয়া।।

কোনো অভিযান চালালে ভিডিও রেকর্ডিং করে রাখতে হবে- এমন নিয়মই চলছে পুলিশে। বলা হচ্ছে, পুলিশকে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার মধ্যে রাখতে এ ধরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। দেশের কোথাও কোথাও পুলিশকে গোপন ক্যামেরা দেওয়ার খবরও রয়েছে।এ ধরণের নির্দেশনা নিয়ে মাঠ পর্যায়ের পুলিশের মাঝে ক্ষোভও রয়েছে। সবকিছু ঠিকঠাক না থাকলে বিব্রত হওয়ার পাশাপাশি জবাবদিহিতার করতে হয় বলে অনেকে অভিযান পরিচালনাও কমিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু অভিযানের ভিডিও ধারণ নিয়ে মুখ ফুটে কেউ কিছু বলতে চাইছেন না। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে পিটুনি শিকার হতে হয়েছে পুলিশকে। মাদকের বড় চালানসহ আসামি ধরার পর তাৎক্ষণিক থানায় না নিয়ে অভিযানের ভিডিও করার প্রস্তুতি নেয়া হলে পুলিশের ওপর হামলা হয়। ভিডিও করার সুযোগে ঘটনা জেনে ওই মাদক ব্যবসায়ীর স্বজনরা ছুটে এসে দুই পুলিশকে পিটিয়ে আহত করে। এর মধ্যে একজন রক্তাক্ত জখম হন।আহত দুই পুলিশ হলেন আশুগঞ্জ থানার সহকারি উপ-পরিদর্শক (এমসআই) মো. ইকবাল হোসেন ও কনস্টেবল মো. সোহানুর রহমান। ওই দুইজনই আশুগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নেন। কাঠের রোলের আঘাতে সোহানুর রহমান রক্তাক্ত জখম হন।অবশ্য পুলিশ মো. জামাল মিয়া প্রকাশ বুজা জামাল (৪২) নামে ওই মাদক ব্যবসায়ীকে থানায় আনতে সক্ষম হন। অভিযানের সময় তার কাছ থেকে ৬৯ বোতল ফেনসিডিল, এক হাজার একশ’ ৫০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট ও মাদক বিক্রির নগদ নয় হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়। গ্রেপ্তার হওয়া জামাল মিয়া উপজেলার চর চারতলা গ্রামের মৃত জয়নাল আবেদীনের ছেলে। এ ঘটনায় জামালসহ তার কয়েক স্বজনকে আসামি করে পৃথক মামলা দায়ের করা হয়েছে। জামালকে সোমবার আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়।খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, খুনের মামলার আসামি ধরতে রবিবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে উপজেলার চর-চারতলা গ্রামে অভিযান চালায় আশুগঞ্জ থানা পুলিশ। এ সময় মহরম পাড়ায় অভিযান চলাকালে ওই এলাকার স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের এক সদস্যের আপন ভাই জামাল মিয়া নামে মাদক ব্যবসায়ীকে এক হাজার একশ’ ৫০ পিস ইয়াবা, ৬৯ পিস ফেন্সিডিলসহ আটক করা হয়। অভিযানের বিষয়টি ভিডিও করছিলেন কনস্টেবল সোহানুর রহমান। এরই মাঝে জামালের ১০-১৫ জন স্বজন এসে সোহানুরকে কাঠের রোল দিয়ে আঘাত করলে তিনি রক্তাক্ত জখম হন। অভিযানে থাকা এএসআই ইকবাল হোসেনকেও তখন কিলঘুষি মেরে আটক থাকা জামাল মিয়াকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হয়। সঙ্গে থাকা অন্যান্য পুলিশ সদস্যরা এ সময় এমন অবস্থা থেকে তাদেরকে রক্ষা করে ও থানায় খবর দেয়। পরে থানা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে মাদকসহ আটক জামালকে থানায় নিয়ে আসে।চর চারতলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. জিয়াউদ্দিন জানান, আটক হওয়ার ব্যক্তির ভাই ও এক আত্মীয়ের কাছ থেকে প্রথমে তিনি ঘটনা শুনেন। যতটুকু জানতে পেরেছেন মাদকসহ একজনকে ধরার পর পুলিশের উপর হামলা হয়েছে।আশুগঞ্জ থানার ওসি মো. জাবেদ মাহমুদ পুলিশের ওপর হামলা হওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তিনি জানান, ভিডিও করার সময় মাদক ব্যবসায়ী জামালের লোকজন পুলিশের উপর হামলা করে। এ ঘটনায় পুলিশের কর্তব্যকাজে বাধা, হামলা ও মাদক আইনে পৃথক দুইটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলার অন্য আসামীদেরকেও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার অফিসার ইনচার্জ (ডিআইও-১) মো. ইমতিয়াজ আহমেদ কালের কণ্ঠকে জানান, অভিযান নিয়ে যেন কোনো ধরণের প্রশ্ন না উঠে সেজন্য ভিডিও করার নির্দেশনা দেওয়া আছে। প্রত্যেক অভিযানের সময় এ কাজে একজন পুলিশ সদস্য দায়িত্ব পালন করেন। রবিবারের ঘটনায় প্রথমে ভিডিও করতে থাকা পুলিশ সদস্যের ওপর হামলা হয়। তবে হামলাকারিরা গ্রেপ্তারকৃতকে ছিনিয়ে নিতে পারেনি।