
আখাউড়া।।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় ইমরান হোসেন নামের এক যুবকের দাঁত ফেলতে গিয়ে মাড়িতে পর পর সাতটি ইনজেকশন পুশ করলেন এক হাতুড়ি দন্ত চিকিৎসক। এখানেই শেষ নয়। দাঁত ফেলে দেওয়ার পর মাড়িতে দিলেন আরো দুই সেলাই। এতে ঘটনাস্থলেই অসুস্থ হয়ে পড়ে ওই যুবক। ঘটনাটি ঘটে রোববার সকালে পৌরশহরের লালবাজার এলাকার ঢাকা ডেন্টাল কেয়ারে। আহত ইমরান পৌরশহরের নারায়নপুর গ্রামের নোয়াব মিয়ার ছেলে।ইমরান জানায়, দাঁতে প্রচন্ড ব্যথা শুরু হলে লাল বাজারের ডেন্টাল কেয়ারের ডিপ্লোমাধারী দন্ত চিকিৎসক সুমন হাওলাদারের শরনাপন্ন হই। এসময় চিকিৎসক সুমন ক্ষতিগ্রস্ত দাঁতটি ফেলে দিতে পরামর্শ দিয়ে কিছু বুঝে উঠার আগেই আমার মাড়িতে সাতটি ইনজেকশন পুশ করে ।পরে সেখানে দুটি সেলাই করে দেয়। এসময় তীব্র ব্যথার যন্ত্রণায় আমি দিক জ্ঞান হারিয়ে ফেলি।
সরেজমিনে ঢাকা ডেন্টাল কেয়ারে গেলে দেখা যায় সাইনবোর্ডে লিখা অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতির সাহায্যে ব্যথামুক্তভাবে এখানে দাঁত তোলা, দাঁত বাধানো, রুট ক্যানেল করানো হয়। এসময় চেম্বারে বসা
ডিপ্লোমাধারী দাবি করে দন্ত চিকিৎসক সুমন হাওলাদার বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত দাঁতটি তোলে ফেলতে অবশ করার প্রয়োজন ছিল। তাই মাড়িতে আমি দুটি এবং আমার ছোট ভাই শাওন পাঁচটি( এনেসথেসিয়া) ইনজেশন পুশ করে। এতে রোগীর কোনো সমস্যা হওয়ার কথা না। এখন ব্যথা হলেও পরে সব ঠিক হয়ে যাবে। আপনি তো ডেন্টাল সার্জন না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি বড়িশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ থেকে ডিপ্লোমা কোর্স করেছি। সেখান থেকে আমাদের রোগীর ক্ষতিগ্রস্ত দাঁত ফেলে দেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া এভাবে অনেকেই দাঁত তোলে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক লাল বাজারের এক ব্যবসায়ি বলেন, এখানে এসে এর আগেও অনেকেই ভুল চিকিৎসার স্বীকার হয়েছেন। কেউ প্রতিবাদ করে,আবার কেউ নিরবে বাড়ি ফিরে যায়। এর একটা ভালো প্রতিকার হওয়া উচিৎ বলে আমি মনে করি।এদিকে খবর পেয়ে দুপুরের দিকে উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভ’মি) ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট সাইফুল ইসলাম ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে ওই দন্ত চিকিৎসককে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করার পাশপাশি প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ করে দেন।এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার- পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ রাশেদুর রহমান বলেন, ডিপ্লোমাধারী দন্ত চিকিৎসকরা প্রাথমিক চিকিৎসা দিতে পারবে । তবে ডেন্টাল সার্জন ছড়া দাঁতে হাত দেওয়ার কোনো ক্ষমতা নেই।উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ নূরে – এ-আলম বলেন , অভিযুক্ত দন্ত চিকিৎসকের বিরুদ্ধে আইনানুক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এ ছাড়া অচিরেই ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে এ ধরনের সব ডেন্টাল ক্লিনিকগুলো বন্ধ করে দেয়া হবে।