
বরিশাল।।
বরিশালে জাতীয় শোক দিবসের ব্যানার খোলাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে সিটি করপোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহসহ অন্তত ৩০ জন গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।বিষয়টি জানিয়েছেন জেলা ছাত্রলীগের সহ সভাপতি আতিকুল্লাহ মুনিম ও সাজ্জাদ সেরনিয়াবাত।বরিশাল সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে বুধবার রাত১১ টার দিকে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। তবে পুলিশ বলছে, মেয়র আহত হওয়ার খবর তাদের কাছে নেই, কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।প্রত্যক্ষদর্শী সুত্রে জানা যায়, বরিশাল সদর উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে রাতে শোক দিবসের ব্যানার খুলতে যান বরিশাল সিটি করপোরেশনের কর্মচারীরা। এসময় ব্যানার খোলার কারণ জানা নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুনিবুর রহমানের সঙ্গে সিটি করপোরেশনের প্রশাসনিক কর্মকর্তা স্বপন কুমার দাসের কথা কাটাকাটি হয়।প্রশাসনিক কর্মকর্তার সঙ্গে থাকা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা এসময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে বিবাদে জড়িয়ে পড়েন। পরে সেখানে উপস্থিত আনসার সদস্যদের সঙ্গে হাতাহাতি শুরু হলে উপস্থিত আওয়ামী লীগ, যুবলীগ এবং ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ইউএনওর বাসায় হামলার চেষ্টা চালায়। এসময় আনসার সদস্যরা গুলি ছুড়লে প্রশাসনিক কর্মকর্তা স্বপন কুমার দাসসহ চারজন আহত হন।প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, যুবলীগ নেতা শাহরিয়ার বাবু, হারুন অর রশিদ ও তানভীরকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। সংঘর্ষের পরে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে পুলিশ অবস্থান নিলে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীরাও সেখানে জড়ো হলে এসময় পুলিশ ও সরকার দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়। এতে আহত অনেকজন। বরিশাল জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সাজ্জাদ সেরনিয়াবাত বলেন – ইউএনও মুনিবুর রহমান নিজে বন্দুক নিয়ে গুলি ছুঁড়েছে। সিটি করপোরেশনের লোকজন ব্যানার খুলতে আসলে এ আচরণ করেন তিনি। এতে করপোরেশনের এও স্বপনসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়। পরে মেয়র মহোদয় এখানে এসে নিজের পরিচয় দিলেও তার উপর গুলি ছোঁড়ে ইউএনও। অভিযোগের বিষয়ে ইউএনও মুনিবুর রহমান বলেন, ‘আমার কম্পাউন্ডে এসে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করলে তাদের বাধা দেয়া হয়। হামলার চেষ্টা করা হয়েছে আমার বাসভবনে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে যেটা করা দরকার সেটাই করা হয়েছে। বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার এনামুল হক বলেন – কিছু স্থানীয় লোকজন সদর উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে রাতে ব্যানার খুলতে আসে। ইউএনও সাহেব তাদের সকালে আসতে বলেন। কিন্তু তা না করে ইউএনও সাহেবের সঙ্গে বিবাদে জড়িয়ে পরে তারা।পরে তার বাসায় হামলার চেষ্টা করলে আনসার সদস্যরা গুলি ছোঁড়ে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে গেলে তাদের সঙ্গে একটু ঝামেলা হয়েছে। কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। তিনি আরও বলেন, ‘মেয়র আহত হওয়ার কোনো খবর আমাদের কাছে নেই। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।’এদিকে এ ঘটনার পর রাত ১১টা থেকে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। সিটি করপোরেশনের গাড়িতে করে ময়লা আবর্জনা সড়কে ফেলে রাখা হয়েছে। পরিস্থিতি থমথমে অবস্থায়।