
ডেস্ক।।
১৮ বছর ৭ মাস ১১ দিন বয়সী এক তরতাজা যুবক ফাঁসির আসামী ৷আর এই মৃত্যুঞ্জয়ী যুবক নিজের মৃত্যুদণ্ডের ঘোষণা শুনে কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে খিল খিল করে হেসে উঠেছিলেন । এই অভূতপূর্ব ঘটনায় স্তম্ভিত হন বিচারক ৷ জিজ্ঞাসা করলেন, ‘‘তোমার ভয় করছেনা ?” ইংরেজ বিচারককে আরও স্তম্ভিত করে দিয়ে গম্ভীর কণ্ঠে উত্তর দিলেন,
– “ আমি গীতা পড়েছি । মৃত্যুভয় আমার নেই । ” এযুগের একজন ১৮ বছরের তরুণের কাছে এগুলো অবাস্তব/গল্প মনে হতে পারে কিন্তু ১৯০৮ সালে বিপ্লবী ক্ষুদিরাম বসু বাস্তবেই এমন দুঃসাহসী কাজ করেছিলেন।ক্ষুদিরামের ফাঁসি কার্যকর হয় ১৯০৮ সালের ১১ আগষ্ট। ঘড়িতে তখন ভোর ৪টা। সে সময় ক্ষুদিরামের পক্ষের আইনজীবি ছিলেন শ্রী উপেন্দ্রনাথ সেন। তাঁর ভাষ্যমতে -“ফাঁসির মঞ্চে ক্ষুদিরাম নির্ভীকভাবে উঠে যান। তাঁর মধ্যে কোন ভয় বা অনুশোচনা কাজ করছিল না। এদেশের নবীন যৌবনের প্রতীক হয়ে হাসিমুখে তিনি উঠে যান ফাঁসির মঞ্চে।” তাইতো বাঁকুড়ার লোককবি পীতাম্বর দাস এই বিপ্লবীর আত্মত্যাগের উপাখ্যানকে কেন্দ্র করেই গানে লিখেছিলেন,
”একবার বিদায় দে-মা ঘুরে আসি।
হাসি হাসি পরব ফাঁসি দেখবে জগৎবাসী।”
এই মহান মৃত্যুঞ্জয়ী বীর ক্ষুদিরাম বুসর বীরত্বের সাদৃশ্যেই হয়তো কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যও লিখে গেছেন, “আঠারো বছর বয়স” কবিতাখানি ৷
যার সারমর্ম – এই বয়সের ধর্মই হল আত্মত্যাগের মন্ত্রে উজ্জীবিত হওয়া, আঘাত-সংঘাতের মধ্যে রক্তশপথ নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়া।