
আশুগঞ্জ।।
১৯৭১ সালে অস্ত্র হাতে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন মো. লায়েছ মিয়া। তবে স্বাধীনতার ৫০ বছর পেরিয়ে গেলেও মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পেতে আজও যুদ্ধ করে যাচ্ছেন তিনি। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলার চর চারতলার গ্রামের ৭২ বছর বয়সী এই যোদ্ধা মুক্তিযুদ্ধের ৩ নম্বর সেক্টরে অংশ নিয়েছিলেন। যুদ্ধকালীন সময় তার গ্রুপ কমান্ডার ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী, সেক্টর কমান্ডার ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আলী আহম্মেদ। বর্তমানে মো. লায়েছ মিয়া বয়সের ভারে এখন অনেকটাই কাহিল। ঠিকমতো হাঁটতেও পারেন না। কিন্তু মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি আদায়ে জন্য এক অফিস থেকে অন্য অফিসে দৌঁড়ে বেড়াচ্ছেন। তবুও মিলছে না সাফল্য, পাচ্ছেন না বয়স্ক ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা ও মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি।
লায়েছ মিয়া বলেন, আমি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে সাড়া দিয়ে দেশকে হানাদার পাকিস্তানিদের কবল থেকে মুক্ত করার সংগ্রামে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলাম। কিন্তু বুক ফেটে এখন কান্না আসে যখন দেখি একই সাথে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করা সহযোদ্ধারা আজ মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে সম্মান-স্বীকৃতি পাচ্ছে। অথচ আমি এ সম্মান থেকে বঞ্চিত হয়ে আছি। কিন্তু ন্যাশনাল আইডি কার্ডে আমার পিতার নাম ভুল আসার কারণে ফাইলেই আটকে রয়েছে, কোনো অগ্রগতি হয়নি।
লায়েছ মিয়ার ছেলে মো. আলম মিয়া বলেন, আমার বাবা রণাঙ্গণের একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুর কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আমার বাবার একটাই আবেদন,একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তার স্বীকৃতি দেওয়া হোক। আমার বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি নিয়ে মৃত্যুবরণ করতে চান।
এ বিষয়ে আশুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার অরবিন্দ বিশ্বাস জানান, মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি ও সম্মানি বা এই সংশ্লিষ্ট বিষয়াদিতে সর্বোপরি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের এখতিয়ার। যাচাই বাছাই সাপেক্ষে আমরা শুধু সুপারিশ করতে পারি।
উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সাবেক কমান্ডার মো. আমিরুল হক (ছোট্টু মিয়া) ও ডেপুটি কমান্ডার আবুল হাসেম বলেন, মো. লায়েছ মিয়া একজন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। সবাই জানে তিনি ভারতে প্রশিক্ষণ নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে লড়াই করেছিলেন। তারা আশা করছেন, জীবদ্দশায় একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে যথাযোগ্য সম্মান ও স্বীকৃতি পাবেন মো. লায়েছ মিয়া।