আখাউড়া।।
পুলিশের সামনে এক নারী বিষপান করেছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় জোর করে থানায় নিয়ে আসার সময় এ ঘটনা ঘটে। পরিবার ও প্রতিবেশিরা ওই নারীকে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। হাসপাতালে স্টোমাক ওয়াশ (পাকস্থলি পরিষ্কার) করে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ডাক্তাররা তাকে জেলা সদর হাসপাতালে পাঠায়। ওই নারীর অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে ঢাকায় পাঠান চিকিৎসক। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ওই নারীকে তার স্বজনরা ঢাকা নিয়ে যাচ্ছেন। তাদের সঙ্গে একজন পুলিশের উপ-পুলিশ পরিদর্শকও রয়েছেন।সোমবার (২৩ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় নুরপুর গ্রামে মৌসুমি আক্তারের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
আখাউড়া থানার ওসি মো. আসাদুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।বিষপান করা ওই নারী হলেন—মৌসুমী আক্তার (২৫)। তিনি উপজেলার দক্ষিণ ইউনিয়নের নুরপুর গ্রামের আইয়ুব খানের মেয়ে।মৌসুমি আক্তারের মা শাহানা বেগম হাসপাতাল চত্বরে অভিযোগ করে বলেন, ‘সন্ধ্যা ৬টার দিকে আখাউড়া থানার এএসআই আব্দুল আজিজ মহিলা পুলিশসহ ৮/১০ জন পুলিশ আমার বাড়িতে এসে আমার মেয়েকে ধরে থানায় নিয়ে যেতে চায়। আমার মেয়ে তখন তাকে থানায় নিয়ে যাওয়ার কারণ জিজ্ঞাসা করে বলে, আমাকে থানায় নিবেন কেন? আমি কি বেলেক (কালোবাজারি) করি? আমার দুইটা ছেলে আছে, আমার স্বামী পাগল। আমি থানায় যাবো কেন?আজিজ দারোগা জানান, ওসি সাহেব তোমাকে থানায় নিয়ে যেতে বলেছে। এ সময় আমি পুলিশকে বলি, আমার মেয়ের হার্টে ব্লক আছে, তাকে নিয়েন না। দরকার হলে আমি থানায় যাব। এ সময় পুলিশ জোরাজুরি করে ধরে নিতে চাইলে আমার মেয়ে পুলিশের সামনে বিষ খেয়ে ফেলে। কিন্তু পুলিশের সামনে বিষপান করলেও কেউ তাকে ফেরাতে আসেনি। পরে আমি তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসি। তিনি আরও অভিযোগ করেন, ‘এর আগেও পুলিশ কয়েক বার আমাকে ধরে আনতে চেয়েছিল।’এদিকে, সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, চিকিৎসক ওই নারীকে চিকিৎসা দিচ্ছেন। এ সময় আখাউড়া থানার ওসি মো. আসাদুল ইসলামসহ বেশ কয়েক পুলিশ সদস্য উপস্থিত রয়েছে। ওসি নিজে তার চিকিৎসার খোঁজ খবর নিচ্ছে। পরে রাত ৮টার দিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে অ্যাম্বুলেন্সে করে জেলা সদর হাসপাতালে নেওয়ার সময় থানার এসআই আবু ছালেক সঙ্গে যান।এ ব্যপারে আখাউড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. মো. লুৎফুর রহমান বলেন, রোগীর প্রেসার অনেক কমে গিয়েছিল। স্টমাক ওয়াশ করে বিষ পাওয়া গেছে। প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাকে জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।এ ব্যাপারে আখাউড়া থানা পুলিশের এএসআই আজিজের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে তাকে পাওয়া যায় নি।ওসি মো. আসাদুল ইসলাম বলেন, কিছু মাদক জব্দ হয়েছিল। আমাদের কাছে তথ্য ছিল মাদকগুলো তাদের। তবে তার বিরুদ্ধে কোনো ওয়ারেন্ট ছিল না। তার ঘরে কিছু পাওয়া যায়নি। আগে রোগীর চিকিৎসা হোক। তারপর যদি তদন্তে এএসআই আজিজের কোনো অপরাধ থাকে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানায় পুলিশ।
Copyright © 2023 Amaderkatha | Design & Developed By: Design Ghor